বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেছেন, ‘ঘটনা না ঘটলে বা জড়িত না থাকলে অহেতুক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না। কারণ, আওয়ামী লীগের আমলে আমাদের নেতা-কর্মীদের কীভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে, সেই যন্ত্রণা আমরা বুঝি। তাই অহেতুক মামলা করা যাবে না। কারণ, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না।’
আজ রোববার বিকেলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর শহরের পৌর মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কায়সার কামাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে হিংসার আগুনে এখন নিজেরাই জ্বলছে। তাঁদের প্রধানমন্ত্রীকে এক কাপড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। দলের সব নেতা-কর্মী এখন ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সামাজিকভাবে মানুষ তাঁদের বর্জন করেছে। কারণ, এত দিন তাঁরা মানুষকে জলুম করেছেন।’
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশে গণতন্ত্র হত্যা করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। আমরা বিশ্বাস করি, দেশে এখন সত্যিকার গণতন্ত্র আসবে। অন্যায় করে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগকে দেখে সবার শিক্ষা নিতে হবে। স্বৈরাচারমুক্ত করতে ছাত্র–জনতাকে রক্ত দিয়ে মূল্য দিতে হয়েছে। এই স্বাধীনতাকে কখনো জলাঞ্জলি দেওয়া যাবে না।’
কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংস্কারের যৌক্তিক সময় দেব। তবে আশা করব, দ্রুত একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটে যে সরকার নির্বাচিত হবে, তাদের হাতে তাঁরা ক্ষমতা তুলে দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমার নিজ জেলা নেত্রকোনা ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর অসাম্প্রদায়িক জেলা। এখানে পাহাড়-হাওর সমতল সব আছে। হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই আদিকাল থেকে মিলেমিশে বসবাস করছি। এই ঐক্য বজায় রাখতে হবে। কোনো অপশক্তি যেন কাজ করতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’
এর আগে আন্দোলনে নিহত দুর্গাপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক, প্রবাসী সাইকুল ইসলাম, শ্রমিক জাকির হোসেন ও মাসুম বিল্লাহর পরিবারকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেন কায়সার কামাল।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কায়সার কামাল ছাড়াও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইমাম হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রাতুল খান, তানজিন জাহান, নিহত ওমর ফারুকের বাবা প্রমুখ বক্তব্য দেন।