বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি, তাঁরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এবার কোনো বাধাই আমাদের বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। দেশের মানুষ মানবে না।’ আজ শুক্রবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একনায়কতন্ত্রের দেশ হয়ে গেছে। এটা এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি হিসেবে আমরা এর মধ্যেই যতটা সম্ভব কাজ করার চেষ্টা করেছি। দুই-তিন মাস ধরে আমরা যে আন্দোলনগুলো করছি, প্রতিটি আন্দোলনই অত্যন্ত জনসম্পৃক্ত। আমরা আন্দোলন করছি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণের সমস্যাগুলো নিয়ে।নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবিতে, আমাদের অধিকারগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সারা দেশে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে তাঁরা বিভাগীয় সমাবেশ করছেন। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। যদিও ওই সমাবেশে আসার সময় পথে পথে নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাঁদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে যশোরের আওয়ামী দুর্বৃত্তরা নির্যাতন করে একজনকে হত্যা করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের অধিকার, সভা করার অধিকার, মিছিল করার অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। কোনো বাধাই তাঁরা মানবেন না, দেশের মানুষ মানবে না। চট্টগ্রাম, জেলা ও উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ের সমাবেশ দিয়ে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। আগামীকাল ময়মনসিংহে একটি সমাবেশ আছে। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ তার আসল চেহারা নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তারা আলাদা একটি সমাবেশ ডেকেছে এবং সেটা ময়মনসিংহ শহরেই ডেকেছে। যেটার কোনো কারণ ছিল না। তাঁদের সমাবেশের তারিখ অনেক আগেই ঘোষণা করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচন যদি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হয়, তাহলে সে নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। বিএনপি তো অংশগ্রহণ করবেই না। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনই হবে না।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বিশ্বাস করলে ওরা সংবিধান বিশ্বাস করত। সংবিধানে যেসব বিধান এখনো আছে, সেখানে পরিষ্কার করে বলা আছে, একজন নাগরিকের সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার আছে, তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহেরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।