‘নরম তুলতুইলা কম্মল পাইনু, তুমরা হামরাকে মেলাই ভালোবাসিছো’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে ২২৫টি পরিবারের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

তিন মাসের শিশুকন্যা নিলন্তি টুডুকে কোলে নিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল নিতে এসেছিলেন মালতি মার্ডি। কম্বলটি শিশুসন্তানের গায়ে দেওয়ার সময় তাঁর আরেক মেয়ে আলোর পাঠশালার ছাত্রী বৃষ্টি মুরমুও এসে ঢুকে পড়ে কম্বলের মধ্যে। সবার মুখে ফুটে ওঠে খুশির ঝিলিক।

এ সময় মালতি মার্ডি বলেন, ‘নরম তুলতুইলা কম্মল পাইনু। তিন মাসের গিদরাকে (শিশুসন্তান) লিয়্যা গায়ে দিব। গিদরাটা জার থাকি বাঁচবে। হামার দুটা বেটি এখুন স্কুলে (বাবুডাইং আলোর পাঠশালা) পড়েহ। তারঘের গিদরাকালেও কম্মল পাইয়্যাছিনু। তুমরা হামরাকে মেলাই ভালোবাসিছো।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল পাওয়া মায়েরা। মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আলোর পাঠশালায়

আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে ২২৫টি পরিবারের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের পরিবার ও বিদ্যালয়ের আশপাশের ১০টি এলাকার ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি পরিবারের মধ্যে। এর মধ্যে যাঁদের শিশুসন্তান রয়েছে, এমন ১৫ মাকে আলাদা করে কম্বল দেওয়া হয়। এ সময় কম্বল পেয়ে মালতি মার্ডির মতো অসহায় শীতার্ত মানুষেরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।

কম্বল নিতে এসেছিলেন বাবুডাইং নতুনপাড়ার সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ মো. আনাদ্দি। সম্প্রতি এক অগ্নিকাণ্ডে তাঁর ঘরবাড়ি, আসবাব, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সব পুড়ে গেছে। কম্বল পেয়ে অসহায় এই বৃদ্ধ বলেন, ‘ব্যাটারা (ছেলেরা) ভিন্ন থাকে। মানুষজনের ফলের বাগান জোগাই। এখন ঠান্ডা বাতাস বহিছে। কম্বলটা গায়ে দিয়্যা বাগান জোগাইতে আরাম পাব।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল পেয়ে আনন্দিত এক মা। মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আলোর পাঠশালায়

বেলা সাড়ে ১১টায় কম্বল বিতরণের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সহসভাপতি কার্তিক কোল টুডু, সদস্যসচিব ও আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুজারুদ্দিন, সদস্য ও গ্রাম্য মোড়ল সুরেন কোল টুডু, মাধব কোল সরেন, চানু হাঁসদা, লগেন সাইচুরি, লাছাম মুরমু, হেফাজুল ইসলাম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন দুপুরে পুষ্টিকর খাবারের জন্য সব অভিভাবককে মুষ্টির চাল দেওয়ার আহ্বান জানান। অভিভাবকেরা সানন্দে সম্মতি জানান।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।