জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্য প্রতীকের কোনো এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঢুকলে হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। প্রার্থীর উপস্থিতিতে এ ধরনের হুমকির ঘটনায় ব্যাখ্যা চেয়ে প্রার্থীকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
ওই প্রার্থীর নাম মো. রফিকুল ইসলাম। তাঁর প্রতীক আনারস। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠি তাঁকে পাঠানো হয়েছে। এতে আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে অনুষ্ঠেয় জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আপনার (আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম) উপস্থিতিতে আপনার (আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম) দুজন কর্মী পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বক্তব্যে বলেন, অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট দিতে নেবেন না এবং এজেন্ট দিলে হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করাসহ নানা ধরনের উসকানিমূলক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য দেন, যা বিভিন্ন পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্বাচন কমিশনে আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সশরীর হাজির হওয়ার জন্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট দিলে হাত ভেঙে দিতে চাওয়া দুই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। ওই হুমকি দেওয়ার সময় প্রার্থী নিজে সেখানে উপস্থিতি ছিলেন। হুমকির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে সশরীর হাজির হয়ে প্রার্থীকে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশনাসংবলিত চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠি প্রার্থীকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
গত বুধবার পিংনা ইউপির সামনে একটি সভায় আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে তাঁর দুই কর্মী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের বাধা দেওয়া, হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করাসহ নানা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যার একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। পাশাপাশি হুমকিদাতা দুই আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল হাসান ওরফে সাইদ ও খন্দকার মোতাহার হোসেন ওরফে জয়ের বিরুদ্ধে শুক্রবার সরিষাবাড়ী থানায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁদের দুজনকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁরা দুজন এখন কারাগারে।