শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত চারটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে পানিবন্দী লোকজন এখনো কলাগাছের ভেলা ও নৌকায় করে চলাচল করছে।
আজ বুধবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশ দেখা যাচ্ছে, যেকোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য গতকাল মঙ্গলবার সকালে হালকা বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে সারা দিন রোদ ছিল।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত ৯টার দিকে ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার ১৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে উপজেলায় উজানের ঢল ও অতি বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের কলসপাড়, জোগানিয়া, মরিচপুরান ও রাজনগর ইউনিয়নের ৭১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ৩১ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। তিনটি ইউনিয়নের ডুবে থাকা অধিকাংশ রাস্তা থেকে পানি নেমে গেছে।
ফকিরপাড়া গ্রামের গৃহিণী আনজুয়ারা বেগম বলেন, বৃষ্টি না থাকায় বন্যার পানি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। কিন্তু বাড়ির চারপাশের পানি এখনো সরেনি। গ্রামের লোকজনের বাড়ির বাইরে যাতায়াতে কলার ভেলা অথবা কাপড় ভিজিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। নৌকায় করে অনেকেই ত্রাণ দিয়ে গেছেন। এতে পানিবন্দী মানুষের উপকার হয়েছে।
কান্দাপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ সাদেক আলী বলেন, ‘আমগর এমনেই নিচা এলাকা। এমনেই বৃষ্টি অইলে পানি জমে। ঘর থাইকা পানি নামেলেও উঠানে অহনও পানি আছে। পানির লাইগা ঘরও আর কত বইয়া সময় পার করুন যায়, তাই ভিইজা বাড়ি থাইকা বাইর অইছি।’
গতকাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। গতকাল বৃষ্টিপাত না থাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল থেকে আকাশ মেঘলা। যেকোনো সময় আবার বৃষ্টি হতে পারে। এ পর্যন্ত উপজেলার ২৭ হাজার ৩০০ বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, খেজুর, স্যালাইন, মোমবাতি ও রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া হয়েছে। বন্যার্তদের সহযোগিতায় সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।