নাশকতাকারীদের ধরতে সমন্বিত টাস্কফোর্স অভিযান চলছে: বিজিবির অধিনায়ক

গাজীপুরের শ্রীপুরের ট্রেনের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ৬৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বনখরিয়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও সিভিল প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্সে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ৬৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (গাজীপুর) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীপুরের বনখরিয়া এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তিনি এ কথা বলেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রেললাইনটি কাটা হয়েছে। আমরা আইডেনটিফাই করার চেষ্টা করছি, এই গ্যাস সিলিন্ডার আসল কোন জায়গা থেকে। আমরা মনে করছি, এই নাশকতা ঘটিয়েছে এখানকার স্থানীয় কেউ। কারণ, এখানে নাশকতা করার জন্য বাইরে থেকে কিংবা অন্য কোনো ডিস্ট্রিক্ট থেকে কেউ এসে করবে না। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই এলাকার আশপাশে গ্রামের মধ্যে যে লোকজন আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা, জিজ্ঞাসাবাদ করা।’

বিজিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটতে পারে, সে ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সিভিল প্রশাসনের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের কাছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে তথ্য আসছে। যারা এই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের আইডেনটিফাই করার চেষ্টা চলছে। টাস্কফোর্স অভিযানের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর সাহস কারও না হয়।’

গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখরিয়া এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের মোট সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ও ভাওয়াল রেলস্টেশনের মাঝামাঝি রেলপথের একটি অংশ কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে ১ যাত্রী নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন।

মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি গাজীপুরের ভাওয়ালের কাছে বনখরিয়া এলাকায় লাইনচ্যুত হয়

আজ সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথে সব ট্রেন সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করেছে। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতি সীমিত রাখা হচ্ছে। লাইনচ্যুত বগি ও ইঞ্জিন দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে আছে। রেলপথ মেরামতে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন রেলের কর্মীরা।

সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির তিন সদস্য। তাঁরা এলাকাবাসী, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে থাকা রেলের কর্মী ও আশপাশের রেলস্টেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া বেলা তিনটায় ঘটনাস্থলে আসেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা ইয়াসমিন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামত করা হয়েছে। গতকাল রাতে দেওয়ানগঞ্জ কম্পিউটার, মহুয়া ও বলাকা এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি সব ট্রেন চলাচল শুরু করে। এরপর আজ সকাল থেকে সব ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।