পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় নিখোঁজের তিন দিন পর পুকুর থেকে আরিফুল ইসলাম (১৯) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের নারায়ণগছ এলাকার একটি পুকুর থেকে আরিফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আরিফুল ইসলাম বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।
আরিফুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামীম হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার ইফতারের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন আরিফুল ইসলাম। এর পর থেকেই তাঁর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় তাঁকে খোঁজাখুঁজি করছিলেন। তবে কোনো সন্ধান না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আরিফুলের বাবা জসিম উদ্দিন তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এর মধ্যে আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আরিফুলের বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নারায়ণগছ এলাকায় একটি বড় পুকুরে লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি জানাজানি হলে আশপাশের লোকজন সেখানে ভিড় জমান। পরে আরিফুলের স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি আরিফুলের বলে শনাক্ত করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। পরে তেঁতুলিয়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহায়তায় মডেল থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুড়াবুড়ি ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনতাজুল হক বলেন, আরিফুলের বাড়ি ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হলেও লাশটি উদ্ধার হয়েছে ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে। প্রথম দিকে পুকুরে পানিতে লাশের শুধু মুখ-মাথা ভাসতে দেখা যায়। উদ্ধারের সময় লাশের ডান হাত সিমেন্টের তৈরি একটি খুঁটির সঙ্গে বাঁধা ছিল। সম্ভবত ওই খুঁটির কারণে লাশটি প্রথমে দিকে ডুবে ছিল। পরে ভেসে উঠেছে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ দীর্ঘক্ষণ পানিতে ডুবে থাকায় শরীরের চামড়া ফোসকা ধরে খসে যেতে শুরু করেছে। তবে প্রাথমিকভাবে শরীরের কোথাও কোনো বড় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। লাশের ডান হাতের সঙ্গে একটি চার ফুট লম্বা সিমেন্টের খুঁটি বাঁধা ছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।