আনারসের দামে চাষিরা খুশি

কৃষি বিভাগ মনে করছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার শ কোটি টাকার আনারস বিক্রি হবে।

  • উপজেলায় ৬৫৪২ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়।

  • হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪০-৪৫ মেট্রিক টন।

মধুপুর চাষিরা বিক্রির জন্য আনারস নিয়ে আসেন জলছত্র, গারো বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে। সম্প্রতি গারো বাজারে

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় এবার আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা। আনারসের এই ভালো ফলন ও দামে এবার চাষিরা বেশ খুশি। এদিকে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার শ কোটি টাকার আনারস বিক্রি হবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার এ উপজেলায় ৬ হাজার ৫৪২ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিক টন। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ২২ হাজার আনারস উৎপাদিত হয়। সেই হিসাবে এবার মধুপুরে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি আনারস উৎপাদিত হয়েছে। মধুপুরে উৎপাদিত বিভিন্ন জাত ও সাইজের আনারস এবার ২০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে গড়ে প্রতিটি আনারস ৩০ টাকা ধরা হচ্ছে। এতে এবার মধুপুরে উৎপাদিত আনারস বিক্রি করে প্রায় সাড়ে চার শ কোটি টাকা।

মধুপুর জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন

পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ জানান, চল্লিশের দশকে ইদিলপুর গ্রামের গারো সম্প্রদায়ের মিজি দয়াময়ী সাংমা এ অঞ্চলে প্রথম আনারস চাষ শুরু করেন। তিনি মেঘালয় থেকে কিছু চারা এনে তাঁর বাড়ির আঙিনায় প্রথমে আবাদ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় আস্তে আস্তে পুরো মধুপুরে আনারস চাষ ছড়িয়ে পড়ে।

ইদিলপুর আনারস চাষি বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. ফজলুল হক জানান, আগে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো ছিল না। তাই আনারস উৎপাদন ভালো হলেও বাজারজাত করা খুব কষ্ট হতো। এখন যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।

মধুপুর অঞ্চলে উৎপাদিত আনারস জলছত্র, গারো বাজার, মোটের বাজার ও আছড়া বাজারে ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ট্রাক ড্রাইভার ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হীরা মিয়া জানান, আনারস মধুপুরের অর্থনীতি ও পরিবহন ব্যবসা সচল রেখেছে। কয়েক হাজার কুলি, শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় আনারসের মৌসুমে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, মধুপুর ছাড়াও গড় এলাকা ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদরে আনারস চাষ হয়। মধুপুর

অঞ্চলে মূলত হানিকুইন ও জায়ান্টকিউর জাতের আনারস চাষ হয়। বর্তমানে চাষিরা আনারস চাষ

করে ভালো দাম পাচ্ছেন। তাই প্রতিবছর বাড়ছে আনারসের চাষ। এবার যে পরিমাণ আনারস উৎপাদিত হয়েছে, তা চাষিরা ৪০০ কোটি টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবেন।