সিলেট

আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি

জেলা ও দায়রা জজ আদালত, সিলেট
ফাইল ছবি

সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পুলিশের দাবি, এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আর আইনজীবীরা বলছেন, পুলিশের হামলায় এক নারী আইনজীবী আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহপরাণ (রহ.) থানা আদালতের জিআরও কর্মকর্তার কার্যলয় থেকে প্রথমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে সেটি আদালতপাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আইনজীবী ও আদালত প্রাঙ্গণে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহপরাণ থানার জিআরও কার্যালয়ে যান আইনজীবী সেবা বেগম। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) বিউটি পুরকায়স্থ। আইনজীবী এ সময় বিউটির কাছে মামলার একটি নথি দেখতে চান। তবে পুলিশ সদস্য তাঁকে নথি দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও নারী আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আইনজীবী সেখান থেকে বেরিয়ে গেলে শাহপরাণ থানার জিআরও উপপরিদর্শক (এসআই) শামীমা বেগম ও বিউটি পুরকায়স্থ তাঁর পিছু নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের নিচতলায় যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে আবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে শামীমা ও বিউটি পুরকায়স্থ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। অন্যদিকে খবর পেয়ে অন্য আইনজীবীরাও একত্র হন। এ সময় আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালতের মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আদালত প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনজীবীর হামলায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহত নারী পুলিশ সদস্য অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে আদালতের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
নারী আইনজীবী সেবা বেগম বিকেলে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানিয়ে বলেন, তিনি প্রথমে শাহপরাণ জিআরও কার্যালয়ে গিয়ে মামলার একটি নথি চেয়েছিলেন। তবে জিআরও থেকে জানানো হয়েছিল, ওই মামলার কোনো নথি আসেনি। এর আগেও একাধিকবার গিয়েও তিনি জিআরওর কাছে সহায়তা পাননি। পরে তিনি আদালতে গিয়ে জানতে পারেন, মামলার ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ হয়ে গেছে।

সেবা বেগম অভিযোগ করেন, আদালত থেকে আবার শাহপরাণ থানা জিআরও কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে এভাবে টালবাহানার কারণ জানতে চাইলে তাঁকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন। পরে সেখান থেকে কোনোরকমে নিজেকে রক্ষা করে চলে আসার সময়, আদালত প্রাঙ্গণে আবার কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাঁকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নিচতলায় আবার তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা নথিপত্র, সঙ্গে থাকা টাকা ও সোনার চেইন এবং আংটি হামলাকারীরা নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অশোক পুরকায়স্থ জানান, এ ঘটনায় বৈঠক চলছে। সিদ্ধান্তের বিষয়টি পরে জানানো হবে।