কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুযায়ী বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছোড়ার মধ্য দিয়ে আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টায় পবিত্র ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।
২০১৬ সালের ৭ জুলাইয়ের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারও জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদগাহ ময়দান ও এর আশপাশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ প্রথম আলোকে বলেন, মুসল্লিদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এবারও সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহায় মুসল্লির সংখ্যা কিছুটা কম হলেও নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই। ঈদগাহে বিজিবি সদস্যসহ বিপুলসংখ্যক র্যাব, আর্মড পুলিশ, সাদাপোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল টিম মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি ফায়ার ব্রিগেড, অ্যাম্বুলেন্সসহ চিকিৎসক দল থাকবে। পুরো ঈদগাহ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে। এ ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করবে ড্রোন ক্যামেরা। থাকবে ওয়াচ টাওয়ার। মাঠের প্রতিটি প্রবেশপথে তল্লাশি করে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করানো হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদগাহে কাউকে ছাতা নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানান কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, শুধু টুপি ও পাতলা জায়নামাজ নিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করতে পারবেন।
শোলাকিয়া মাঠ নিয়ে দুটি জনশ্রুতির বর্ণনা আছে। এর একটি হলো, মুঘল আমলে এখানকার পরগনার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল শ লাখ টাকা। মানে এক কোটি টাকা। কালের বিবর্তনে শ লাখ থেকে বর্তমান শোলাকিয়া হয়েছে। আরেকটি জনশ্রুতি হলো, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এটি শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।