খুলনার তেরখাদা উপজেলায় বাবা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউপির চেয়ারম্যান এস এম দ্বীন ইসলাম, একই এলাকার মো. আবদুর রহমান, জমির শেখ, শেখ সাইফুল ইসলাম, খালিদ শেখ, এস্কেন্দার শেখ, জসিম শেখ, হোসেন শেখ, জিয়ারুল শেখ, বাহারুল শেখ, আব্বাস শেখ, অহিদুল গাজী, খাইরুল শেখ, কেরামত মল্লিক, মাহবুর শেখ, বাবু শেখ ও নুর ইসলাম শেখ। আর খালাস পেয়েছেন আবু সাঈদ বিশ্বাস ও আয়ুব শেখ। এর মধ্যে আবদুর রহমান, খালিদ, সাইফুল ও জমির হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
ওই মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. আহাদুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট নয়। ওই ঘটনায় চারজন আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হয়নি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে তিনি জানান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট রাতে তেরখাদা উপজেলার পহরডাঙ্গা গ্রামের পিরু শেখ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সিঁধ কেটে পিরুর ঘরে ঢোকেন। এরপর ঘরের মধ্যে পিরুকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন আসামিরা। এ সময় পিরু ও তাঁর স্ত্রী মাহফুজা খাতুনের চিৎকারে পাশের ঘর থেকে ছেলে নাঈম বেরিয়ে এলে আসামিরা তাঁকেও কোপান। ঘটনাস্থলেই মারা যান নাঈম। আর ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান পিরু শেখ। ওই ঘটনার দুই দিন পর পিরু শেখের স্ত্রী বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।