দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনূর পাশা চৌধুরী। নিজের দল ছেড়ে গতকাল রোববার তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কয়েকটি ইসলামী দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন শাহীনূর পাশা। পরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ স্থগিত করে।
শাহীনূর পাশা চৌধুরী তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জমিয়তের জন্য নিজের জীবন–যৌবন সব শেষ করলাম। অথচ আজ দলের একটি অংশ ষড়যন্ত্র করে আমাকে দল ছাড়তে বাধ্য করল। আমি অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেব।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের (জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) জগন্নাথপুর উপজেলায় শাহীনূর পাশার বাড়ি। তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ছিলেন। দলের একজন নীতিনির্ধারক ছিলেন তিনি। শাহীনুর পাশা চৌধুরী সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ২০০৫ সালের উপনির্বাচনসহ মোট পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে চারবার বিএনপি-জামায়াতের জোটের প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে, একবার নির্বাচন করেছেন নিজের দলের প্রতীক খেজুরগাছ নিয়ে।
এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হন তিনি। উপনির্বাচনে তখন আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দুই বছরের জন্য সংসদ সদস্য হয়েছিলেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী। এরপর ২০০৮, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও আর জয়ী হতে পারেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের এই নেতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করায় শুক্রবার দুপুরে তাঁর দলীয় পদ স্থগিতের কথা জানিয়ে জমিয়তের কেন্দ্রীয় মহাসচিব চিঠি পাঠান শাহীনূর পাশাকে। এরপর সন্ধ্যায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে পদত্যাগ করে চিঠি দেন শাহীনূর পাশা। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতির পদেও ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে শাহীনূর পাশা চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। আমরা তাঁর কাছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানাই। তিনি আশ্বস্ত করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে সন্তুষ্ট, তাই নির্বাচনে অংশ নেব। দল বদলে কোনো প্রভাব পড়বে না। এই নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি গ্রামে আমার কর্মী-সমর্থক আছেন। আমি সবার সহযোগিতা পাব।’