বগুড়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে রিকশাচালক আবদুল মান্নান নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১২২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে। নিহত আবদুল মান্নানের ছেলে রানা হামিদ বাদী হয়ে গতকাল বুধবার রাতে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ চারজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত আবদুল মান্নানের বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, এ কে এম আসাদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান, বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান, শহর কমিটির সভাপতি নাছিমুল বারী, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজি, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাশরাফী হিরো, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি নাইমুর রাজ্জাক, বগুড়া বাস মিনিবাস পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট বেলা একটার দিকে বগুড়া শহরের প্রধান সড়কে বড়গোলা ট্রাফিক মোড় এলাকায় আন্দোলন চলাকালে রিভলবার, পিস্তল, বন্দুক, আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলাও করা হয়। যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকার হাতে থাকা পিস্তলের গুলি রিকশাচালক আবদুল মান্নানের হৃৎপিণ্ডে বিদ্ধ হয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় ছাত্র-জনতা হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ আবদুল মান্নানকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইহান ওলিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনের সময় গুলিতে রিকশাচালক নিহতের ঘটনায় ১২২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।