বাগেরহাট

দুবলার চরে শুঁটকির মৌসুম শুরু, জেলেদের উচ্ছ্বাস 

৩ নভেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগরের পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে শুঁটকি মৌসুম। এখানে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শুঁটকি তৈরি করা হবে।

সাগর থেকে ধরে আনা মাছ শুঁটকি করা হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি
প্রথম আলো

বঙ্গোপসাগর তীরে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে শুঁটকি মৌসুম। বন বিভাগের অনুমতি (পাস) নিয়ে শুক্রবার থেকে জেলেরা দুবলার চরের শুঁটকি তৈরির জন্য ঘর নির্মাণ এবং সাগরে মাছ আহরণ শুরু করে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাত থেকে সুন্দরবন উপকূলের জেলেরা দুবলার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।

গতকাল শুক্রবার ভোররাতে বাগেরহাটের দুবলার চরে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে জেলেরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চরে ঘর নির্মাণ ও সাগরে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। দুপুরে গড়াতেই জালের প্রথম খেপের মাছও চলে এসেছে চরে। সেগুলো বেছে চরে শুকাতেও দিয়েছেন জেলেরা। এর আগে উপকূলের জেলেরা শুঁটকির মৌসুম ঘিরে নিজ নিজ এলাকায় তাঁদের জাল, নৌকা মেরামত ও সব সরঞ্জাম প্রস্তুত করেন।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (সদর) রানা দেব বলেন, ৩ নভেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগরের পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে শুঁটকির মৌসুম। এ শুঁটকির মৌসুম চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। টানা ৫ মাস ধরে সেখানকার চরে থাকতে হবে কয়েক হাজার জেলেকে।

সাগরপাড়ের এ চরে তাঁদের থাকতে হয় অস্থায়ী কাঁচা ঘরে। জ্বালানি, মাছ শুকানোর চাতাল, মাচাসহ সব ধরনের কাজে সুন্দরবনের কোনো গাছপালা ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়াতে চরে যাওয়া জেলেরা সঙ্গেই নিয়ে গেছেন প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। 

আলোরকোল অস্থায়ী ক্যাম্প ও দুবলা জেলেপল্লি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীলিপ মজুমদার বলেন, উপকূলের বিভিন্ন এলাকার জেলেরা বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে রওনা হয়ে এসে ভোররাতেই পৌঁছে যান দুবলার চরে। শুক্রবার ভোর থেকে আসা জেলেরা চরে ঘর তৈরি করতে শুরু করেছেন। জেলেদের এই থাকার ঘর তৈরি করতে দুই-তিন দিন লাগবে। এদিকে ভোরে চরে এসেই ঘর, মাচা, চাতাল তৈরিসহ অন্য জিনিসপত্র নামিয়ে রেখে জাল এবং নৌকা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা।

মৌসুম শেষে জেলে ও ব্যবসায়ীরা আবার ফিরে আসবেন বাড়িতে। এবার উপকূলের বিভিন্ন এলাকার থেকে চরে এসেছেন প্রায় ১০ হাজার জেলে। তাঁরা প্রায় দেড় হাজার ট্রলার নিয়ে মাছ ধরবেন গভীর সাগরে। সাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে শুঁটকি করবেন তাঁরা।