সিলেটে নিরাপত্তাপ্রহরীর উপস্থিতিতেই এটিএম বুথ থেকে ২৬ লাখ টাকা চুরি

দুই ব্যক্তি বুথের লকার খুলে টাকা নিজেদের ব্যাগে ভরে নেন
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ২৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা চুরির ঘটনাটি নিরাপত্তাপ্রহরীর উপস্থিতিতেই হয়েছে। মুখে মাস্ক, মাথায় ক্যাপ ও চোখে চশমা পরা দুই ব্যক্তি বুথের লকার খুলে টাকা নিজেদের ব্যাগে ভরে নেন। ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে একজনের হাতে গ্লাভস ও কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো ছিল। টাকা ব্যাগে ঢোকানোর আগে এটিএম বুথের সামনের শাটার নামিয়ে রেখেছিলেন নিরাপত্তাপ্রহরী। চুরি হওয়া বুথের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত ২৮ অক্টোবর রাতে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকার ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। পরে ৩০ অক্টোবর বুথে ‘ক্যাশ জ্যাম’–সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিলে বুথে গিয়ে ২৬ লাখ ৩২ হাজার টাকার হিসেবে গরমিল পায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় বুথে টাকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিকিউরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের দুই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ব্যাংকটির সিলেট অঞ্চলের এটিএম বুথের ইনচার্জ সন্দীপন দাস।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে ওই বুথে মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক, চোখে কালো চশমা ও হাতে গ্লাভস পরা দুই ব্যক্তি সুবিদবাজার এলাকার এটিএম বুথে প্রবেশ করেন। বুথের আশপাশে নিরাপত্তাপ্রহরী উপস্থিত ছিলেন না। ওই দুই ব্যক্তি বুথের ভেতরে প্রবেশ করেন। সে সময় একজন বুথের নিচের দিকের অংশ খোলেন এবং অন্যজন তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে নিরাপত্তাপ্রহরীকে বুথের সামনে উপস্থিত হতে দেখা যায়। ভেতরে থাকা দুই ব্যক্তির দিকে উঁকি দেন। ভেতরে থাকা এক ব্যক্তিকে নিরাপত্তাপ্রহরীকে শাটার নামানোর জন্য ইশারা দিতে দেখা যায়। পরে নিরাপত্তাপ্রহরী শাটার নামিয়ে দেন। একপর্যায়ে ওই দুই ব্যক্তি বুথের লকার খোলে ভল্ট নামিয়ে সেখান থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের ব্যাগে ভরেন।

এ ঘটনায় মামলা করার পরপরই একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আলবাব হোসেন (২২) সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার হাতিদহর গ্রামের বাসিন্দা। তবে পলাতক রয়েছেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার নৈখাই গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল হক (২৪)। তাঁরা দুজনই সিকিউরেক্স নামের প্রতিষ্ঠানটির এটিএম ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন।

প্রতিষ্ঠানটির সিলেটের এটিএম ইনচার্জ সন্দীপন দাস বলেন, মুখে মাস্ক, ক্যাপ ও চশমা পরা থাকলেও দুজনের শরীরের গঠন দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরীর সঙ্গেও দুই ব্যক্তি কথা বলেছেন। শাটার নামিয়ে দিয়েছেন প্রহরী। তিনি আরও বলেন, আলবাব হোসেন ও আমিনুল একই প্রতিষ্ঠানে বুথের দায়িত্ব পালন করতেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার আলবাব হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় একজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ অন্য আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।