মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় অটোচালক আশরাফুল ইসলাম (৩৩) হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো রুবেল (২৯), মো. রাজেন (২৫), হাসান শেখ (২২) ও আকরাম মোল্লা (২২)। বাকি তিন আসামির মধ্যে আমির ব্যাপারী (৪০) ও আবুল কালামকে (৩৮) দুই বছর এবং কাজল শেখকে (৩১) তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এজাহারভুক্ত আসামি ইমরান হোসেন ও সবুজ শেখ নামের দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, একটি অটোরিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে চালককে হত্যা করেন আসামিরা। মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষ্য দেন।
মামলার বাদী নিহত চালকের বাবা মো. রফিকুল ইসলাম রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আশরাফুল অটো চালিয়ে আমাদের সংসার চালাত। মৃত্যুর সময় দুই বছরের একটি মেয়ে রেখে গেছে। এ রায়ে আমি ও আমার পরিবার খুশি হয়েছি। এখন রায় কার্যকর দেখে যেতে চাই।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার বাঘরা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সেদিন রাত আটটার দিকে তাঁর বাবা রফিকুল ইসলামের কাছে খবর আসে, আশরাফুলকে লৌহজং উপজেলার গোয়ালিমান্দ্রা এলাকায় গলাকাটা অবস্থায় ফেলে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে লৌহজং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহত আশরাফুলের বাবা রফিকুল ইসলাম মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানায় নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তে পুলিশ গোয়ালিমান্দ্রা সেতুর পশ্চিম পাশে বটতলায় গিয়ে ইটের টুকরা দিয়ে মাটিতে হাসান ও রাজেনের নাম লেখা দেখতে পান। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রুবেল ও আকরাম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাঁরা ঘটনার বিবরণ দেন। তাঁরা যাত্রী বেশে শ্রীনগর থেকে আশরাফুলের অটোরিকশায় উঠেছিলেন। পরে লৌহজংয়ের গোয়ালিমান্দ্রা হলদিয়া পাকা রাস্তার কারপাশা গ্রামের চানকার সেতুর কাছে এসে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করে আশরাফুলকে রেখে চলে যান আসামিরা।