দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় দাখিল পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহারিকের জন্য চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় দুটি মাদ্রাসার ৯ শিক্ষার্থীকে পাস নম্বর না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার ও কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই দুটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠানপ্রধান (সুপার)।
ওই ৯ জন কাহারোল উপজেলার পূর্ব সরঞ্জা দাখিল মাদ্রাসা ও চামদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তাঁদের পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল কাহারোল বাজার ফাজিল মাদ্রাসা। অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় ভালো করলেও পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহারিকে তারা ফেল করেছে। ফলে এবারের দাখিল পরীক্ষায় তারা পাস করতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার সকালে লিখিতভাবে ওই হল সুপার ও কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন দুটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠানপ্রধান (সুপার)।
লিখিত আবেদনে পূর্ব সরঞ্জা দাখিল মাদ্রাসার সুপার তমিজুল ইসলাম জানান, এবার দাখিল পরীক্ষায় কাহারোল বাজার ফাজিল মাদ্রাসায় তাঁর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সাত্তার কাদেরী কেন্দ্রসচিব হিসেবে এবং হাটিয়ারী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার প্রধান লোকমান আলী হল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। পরীক্ষার্থীরা ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ইচ্ছাকৃতভাবে চার শিক্ষার্থীকে ফেল নম্বর দেওয়া হয়েছে। একইভাবে চামদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার সুপারও পাঁচ পরীক্ষার্থীকে ফেল করার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সুবিচারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাহারোল বাজার দাখিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব আবদুস সাত্তার কাদেরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন এমন অভিযোগ করা হচ্ছে, আমি জানি না। ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর তো আমি দিইনি। এর জন্য আলাদা পরীক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁরা কত নম্বর দিয়েছেন, তা আমি জানি না। আমি কোনো টাকা নিইনি।’
এ বিষয়ে কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই মাদ্রাসাপ্রধান বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তাঁদের লিখিত অভিযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ হয়তো দিয়েছেন। এখনো দেখা হয়নি। অভিযোগ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ২৮ জুলাই এসএসসি, দাখিলসহ সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এদিকে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা সমালোচনা। জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে এক শিক্ষার্থীর নম্বরপত্রের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন পূর্ব সরঞ্জা ও চামদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার ৯ শিক্ষার্থী সব বিষয়ে ভালো ফল করলেও পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহারিক পরীক্ষায় ২৫ নম্বরের মধ্যে ৬ নম্বর দিয়ে অকৃতকার্য করা হয়েছে।
জাকির হোসেনের পোস্ট করা নম্বরপত্রে দেখা যায়, এক শিক্ষার্থী কোরআন মাজিদ, হাদিস শরিফ, আরবি (প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র), আকাইদ ও ফিকাহ, গণিত, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত বিষয়ে ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড।