ময়মনসিংহ সিটি মেয়র-কাউন্সিলরদের প্রবেশ ঠেকাতে নগর ভবনের সামনে বিএনপি নেতাদের অবস্থান। আজ সকালে তোলা
ময়মনসিংহ সিটি মেয়র-কাউন্সিলরদের প্রবেশ ঠেকাতে নগর ভবনের সামনে বিএনপি নেতাদের অবস্থান। আজ সকালে তোলা

ময়মনসিংহের মেয়র-কাউন্সিলরদের প্রবেশ ঠেকাতে বিএনপি নেতাদের অবস্থান

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে আওয়ামীপন্থী মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রবেশ ঠেকাতে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে তাঁরা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে কর্মকর্তাদের বের করে দিয়ে নগর ভবনের প্রতিটি কক্ষে ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।

এ বিষয়ে আবু ওয়াহাব বলেন, ‘অবৈধ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলররা ১৭টি বছর ধরে লুটেপুটে খাচ্ছে। বিএনপি জনগণের স্বার্থে ইতিমধ্যে কর্মসূচি দিয়েছে। হাসিনা সরকারের দোসর যারা অফিস-আদালতে বসে লুটপাটের পাঁয়তারা করছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। তারই অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইতিমধ্যে অবস্থান নিয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ছাত্রদল ও যুবদলের অন্তত দেড় শ নেতা-কর্মী ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে ঢোকেন। সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় তলা থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলীকে লাঞ্ছিত করে নিচে বের করে দেন তাঁরা। সিটি করপোরেশনের অন্য কক্ষগুলোয় ঢুকে কর্মকর্তাদের বের হয়ে যেতে বলা হয়। কক্ষের দরজাগুলোয় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে নেওয়া হয় চাবি। করপোরেশনের প্রধান গেটসহ বিভিন্ন গেটে নতুন তারা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমতে, গতকাল সকালে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু অফিস করেছেন। কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের ছবি মেয়রের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। সিটি মেয়র অফিস করায় অসন্তোষ শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা বেলা ১২টার দিকে নগরভবনে মিছিল নিয়ে যান এবং সেখানে মেয়রকে না পেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে মেয়রের গ্রেপ্তার দাবি করেন।

এদিকে আজ নগর ভবনের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান করায় সকাল থেকে কর্মকর্তারা হাজির হতে পারেননি। তবে নেতাদের আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে আসেন। তাঁরা কার্যালয়ে এলে তালা খুলে দিতে দেখা গেছে।

সেবাপ্রার্থীরা কার্যালয়ে তালা দেওয়ার বিষয়টি না জানায় অনেকেই সেবা নিতে এসে কর্মকর্তাদের না পেয়ে ফিরে যান। তেমনই একজন মমিনুর রহমান। বেলা ১১টার দিকে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শাখায় আমার কাজ ছিল। কিন্তু এসে দেখি কার্যালয়গুলোতে তালা দেওয়া। সাধারণ মানুষের জন্য এটি ভোগান্তির বিষয়।’

বেলা ১১টা পর্যন্ত কার্যালয়ে দেখা যায়নি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল কিছু উঠতি বয়সী ছেলেপেলে ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা যেহেতু নাগরিক সেবা দিয়ে থাকি, তাই সব কর্মকর্তাকে আজ অফিসে যেতে বলা হয়েছে।’