বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ১১ বছর হচ্ছে আগামীকাল সোমবার।
এ উপলক্ষে আজ রোববার নিখোঁজ ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে অক্ষত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদী যাত্রা, স্মারকলিপি প্রদান ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। বিএনপির অভিযোগ, তাঁকে সরকারের লোকজন গুম করে রেখেছে। ওই সময় ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে টানা এক সপ্তাহ হরতাল পালিত হয় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তখন হরতালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন কর্মী নিহত হয়েছিলেন।
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ প্রতিবাদী শোভাযাত্রা নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, এম ইলিয়াস আলীর গুমের ১১ বছর হবে আগামীকাল। ১১ বছর আগে ঢাকার বনানীতে নিজ বাসার কাছ থেকে তাঁকে ও তাঁর গাড়িচালক আনছার আলীকে গুম করা হয়। এখন পর্যন্ত তাঁদের হদিস পাওয়া যায়নি। গুম হওয়ার পর সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তাঁকে অক্ষত অবস্থায় খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ ১১ বছরেও তাঁদের সন্ধান দিতে পারেনি সরকার।
স্মারকলিপি প্রদানের আগে প্রতিবাদী শোভাযাত্রা পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সিলেটবাসীর প্রিয়নেতা ইলিয়াস আলীসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। গুম করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। বরং আন্দোলনের দাবানল তীব্র থেকে তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এই সরকারের বিদায় না হলে গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের ফিরে পাওয়া কঠিন। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।’
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গুম ও খুনের পথ বেছে নিয়েছে। এসব গুম-খুন করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখা যাবে না। জনগণ জেগে উঠেছে, রাস্তায় নেমেছে। আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অচিরেই স্বৈরাচারের পতন হবে।’
স্মারকলিপি দিয়ে আজ জোহরের নামাজের পর হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর দরগাহ প্রাঙ্গণে এম ইলিয়াস আলীসহ নিখোঁজ নেতা-কর্মীদের সন্ধান কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা নুরুল হক, এমদাদ আহমদ চৌধুরী, আশিক উদ্দিন, এ কে এম তারেক কালাম, ইকবাল বাহার চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, হাসান আহমদ পাটোয়ারী, তাজরুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, আবু তাহের, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, কোহিনুর আহমদ, শাকিল মোর্শেদ, মাহবুব আলম প্রমুখ।