ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের, চাচাতো বোন ও তাঁর কথিত প্রেমিক আটক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় প্রেমে বাধা দেওয়ায় চাচাতো বোনের প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে সুমন মিয়া (২৭) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার ভোরে বুধল ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সুমন মিয়া একই বেতবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে ব্যবসা করতেন। অনাগত সন্তানের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করতে তিনি সম্প্রতি সেখান থেকে গ্রামে আসেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম এস এম নুরুল ইসলাম (৫০)। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মা–বাবার মৃত্যুর পর সুমনের পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন তাঁর চাচাতো বোন সুমনা আক্তার (২৫)। প্রায় দুই বছর আগে নুরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে সুমনার পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নুরুল ইসলাম বিবাহিত ও সংসারে ছেলে–মেয়ে আছে। এসব কারণে তাঁদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সুমন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গত সোমবার রাতে নুরুল ইসলামকে নিজ বাড়িতে দেখে উত্তেজিত হন সুমন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পরে সুমনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন নুরুল ও সুমনা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছুরি হাতে ওই বাড়িতে আবার প্রবেশ করেন নুরুল। কিছুক্ষণ পর সুমনের সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি। একপর্যায়ে সুমনের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন নুরুল। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সুমন। জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সুমনা ও নুরুলকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন সুমনের মা আলিয়া বেগম (৫০)। সংজ্ঞা ফিরলেই বলতে থাকেন, ‘আমার সব শেষ। কত কষ্ট কইরা ফোলাডারে (ছেলে) ফালছি, মানুষ করছিরে। অহন আমাদের কী অইবরে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।’

এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন। জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সুমনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।