শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে আসেন উপাচার্য সালেহ্‌ হাসান নকীব। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে আসেন উপাচার্য সালেহ্‌ হাসান নকীব। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন পোষ্য কোটা বাতিল চাওয়া শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙেছেন। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের আশ্বাসে তাঁরা জুস ও বিস্কুট খেয়ে অনশন ভাঙেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে আমরণ অনশন শুরু করেন তিনজন শিক্ষার্থী। এরপর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অনশনে অংশ নেন। এরপর সেখানে অন্তত নয়জন শিক্ষার্থী সারা রাত অবস্থান করেন। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আজ সকালে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্তাব্যক্তি কয়েক দফা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তবে শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবির বিষয়ে অনড় থাকেন।

এরপর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীবের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর সব জায়গায় সংস্কার ও নতুন করে চিন্তা করার দরজা উন্মুক্ত হয়েছে। নতুন বাস্তবতায় কোটা রাখার সুযোগ নেই। ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় ৩ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখার পক্ষে ৮০-৯০ শতাংশ স্টেকহোল্ডাররা (অংশীজনেরা) মতামত দিয়েছেন। সেখানে আমার অবস্থান জানিয়ে তাঁদের বলেছি, এটি রাখার পক্ষে সুস্পষ্ট কোনো যুক্তি আমার কাছে নেই।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘নিয়ম ও যুক্তির মধ্য দিয়ে এটা সমাধান করতে হবে। সর্বোচ্চ সহানুভূতি ও বিবেচনা দিয়ে একটা রিভিউ কমিটি তোমাদের সঙ্গে বসবেন এবং তোমাদের কথা শুনবেন। সেখানে তোমরা তোমাদের দাবি, সমস্যা ও সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরবে। শিক্ষক ও বেশ কিছু কর্মকর্তা আছেন, যাঁদের জন্য পোষ্য কোটা মানায় না। আবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যাঁরা একেবারে নিম্ন আয়ের, জীবন নিয়ে সংগ্রাম করেন, যদি সুযোগ থাকে, এসব বিষয়ও উঠে আসবে আলোচনায়। তোমরা অনশন ভাঙবে এ জন্য যে তোমরা যেটা চাচ্ছ, সেটা করার জন্য আমাদের সব চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) আন্দোলন মঞ্চের সদস্যসচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেছেন একটা রিভিউ কমিটি আমাদের সঙ্গে বসে সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। সেই সিদ্ধান্ত যদি আমাদের পক্ষে না যায়, তাহলে আমরা আবারও আন্দোলনে বসব।’