রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী নায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আজ রোববার সকাল ১০টায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এতে মাহিসহ আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র চার প্রার্থীরই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
অন্য সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। এ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হলেও তাঁর বকেয়া থাকা সাড়ে ১০ লাখ টাকার করসংক্রান্ত জটিলতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় নায়িকা মাহি উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তিনি চলে যান।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি তাঁর সমর্থক হিসেবে যে ভোটারদের সই দিয়েছেন, তা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে গরমিল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ললিতা মার্ডি নামের একজন নির্বাচনী এলাকার ভোটারই নন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার ভোটার। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামানের দেওয়া ভোটারদের সইয়ের তালিকায়ও গরমিল পাওয়া গেছে। ৯ জনের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীরও ভোটারদের তালিকায় তিনজনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর সাতজন সমর্থকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, আগে কখনো নির্বাচিত হননি, এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সই জমা দিতে হয়। প্রার্থীদের দেওয়া এই সই থেকে ১০ জন করে ভোটারের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এতে নায়িকা মাহিসহ চারজন প্রার্থীর সমর্থকদের তালিকায় গরমিল পাওয়া গেছে।
মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণার পর মাহিয়া মাহি সাংবাদিকদের বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন।
শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। আপিল করার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীও। তবে আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান বলেছেন, তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আপিলের সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই আসনে ওমর ফারুক চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), মো. শামসুজ্জোহা (বিএনএম), মো. আল-সাআদ (বিএনএফ), জামাল খান (তৃণমূল বিএনপি), নুরুন্নেসা (এনপিপি), বশির আহমেদ (মুক্তিজোট) ও মো. শামসুদ্দীনের (জাতীয় পার্টি) মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর।