সাতক্ষীরায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগে তৎকালীন পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারসহ ১০ পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন মোছাম্মাৎ শাহানারা খাতুন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম।
মামলার বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে খুলনা রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ হাসেমী, সদর থানার ওসি মারুফ হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহারীয়ার হোসেন, সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুপ কুমার দাস, গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রবিন মন্ডল, মিজানুর রহমান, এএসআই রাজু আহম্মেদ ও বিষ্ণুপদ। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ১২ জুলাই দেলোয়ার হোসেনকে বাড়ি থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যান ডিবির এসআই মিজানুর রহমান ও এএসআই রাজু আহম্মেদ। স্থানীয় বাঁশদহা বাজারে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি প্রস্তুত ও সরবরাহের ব্যবসায় দেলোয়ারের কোনো সরকারি অনুমোদন ছিল না—অভিযোগ করে তাঁর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন ডিবির তৎকালীন ওসি আলী আহম্মেদ হাসেমী। বিষয়টি নিয়ে পরদিন পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেনের কাছে অভিযোগ করেন দেলোয়ার। পুলিশের এই কর্মকর্তা দেলোয়ারকে সহকারী পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের কাছে পাঠিয়ে দেন।
অভিযোগের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের কয়েকজন ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় দেলোয়ারকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে দেলোয়ারের স্ত্রী শাহানারার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এসআই মিজানুর রহমান ও এএসআই রাজু আহম্মেদ। টাকা না দিলে তাঁর স্বামীকে রাতেই ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন ১৫ জুলাই সকালে বাঁশদহা কয়ারবিল এলাকায় দেলোয়ারের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তাঁর গলার বাঁ কাঁধের ওপরে একটি এবং ডান বগলের নিচে ও পিঠের দিকে একটি করে গুলির চিহ্ন ছিল। ঘটনাস্থল থেকে আবুল কালাম আজাদ নামের আরও একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গিয়েছিল। খুন হওয়া দেলোয়ার হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা ও একটি পানি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন।