২০২২ সালের জুনে ভয়াবহ বন্যায় জগন্নাথপুরসহ জেলার সব কটি উপজেলায় গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কার প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। দেড় বছর ধরে কাজ শুরু না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। দ্রুত সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
২০২২ সালের জুনে ভয়াবহ বন্যায় জগন্নাথপুরসহ জেলার সব কটি উপজেলায় গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ সময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু সংস্কারের জন্য এডিবির জরুরি সহায়তায় বন্যা ২০২২-এ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন নামে ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। গত দেড় বছরে প্রকল্পের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের কাজ শুরু না হওয়ায় উপজেলাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলার ১৮০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে উপজেলার কলকলিয়া-তেলিকোনা-চণ্ডীডহর সড়কের ১০ কিলোমিটার অংশ, জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কের ১৫ কিলোমিটার অংশ, জগন্নাথপুর-চিলাউড়া-হলদিপুর সড়কের ৯ কিলোমিটার অংশ, কেশবপুর-এরালিয়া-ভায়া রসুলগঞ্জ সড়কের ১০ কিলোমিটার অংশ, রানীগঞ্জ-শিবগঞ্জ সড়কে সাড়ে ৫ কিলোমিটার অংশ ও মজিদপুর-এরালিয়া সড়কের ২ কিলোমিটার অংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়। এসব সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ সেতু ও কালভার্ট রয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে কলকলিয়া-তেলিকোনা-চণ্ডীডহর সড়ক, জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়ক, জগন্নাথপুর-চিলাউড়া-হলদিপুর সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পিচ উঠে মাটি বের হয়ে ছোট–বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে চলাচল বিঘ্নিত হয়।
কলকলিয়া-তেলিকোনা-চণ্ডীডহর সড়ক পরিদর্শনকালে কথা হয় সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সড়কের বেহাল দশার কারণে ভুল করে একবার কোনো যানবাহন যাতায়াত করলে দ্বিতীয়বার যাতায়াত করে না। দেড় বছর ধরে আমাদের দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।’
জগন্নাথপুর শিবগঞ্জ–বেগমপুর সড়কটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সড়কটি সংস্কারের উদ্যাগ নেই। সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী ঘোষগাঁও গ্রামের রমজান আলী বলেন, সড়কের বেহাল দশায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম জানান, জগন্নাথপুর–হলদিপুর–চিলাউড়া সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যান চলাচল করে। ভাঙাচোরা গর্তে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত সেতু, কালভার্টের কাজ বাস্তবায়নের জন্য সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। সড়কের সেতু ও কালভার্টের ডিজাইন কাজ চলছে আর সড়কের সংস্কারকাজ জুলাই মাসে হবে।’