রাজবাড়ীর কালুখালীতে ধানখেত থেকে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হওয়ার দুই সপ্তাহ পর পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এক আসামি আদালতের জবানবন্দিতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
উপজেলার মোহনপুর গ্রামে বিলের ধানখেত থেকে গত ২৫ অক্টোবর ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে কালুখালী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে কালুখালী থানা ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পৃথক দল। ৮ নভেম্বর ওই ধানখেত থেকে পুলিশ একটি ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করে। ব্যাগ থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে নাম–পরিচয় পাওয়া যায়। ৩০ বছর বয়সী ওই নারীর বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায়। পরে নিহত নারীর বাবা বাদী হয়ে কালুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন পাংশা উপজেলার গোপালবাড়ি বনগ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (৩৬) ও একই মাদুলিয়া গ্রামের মৃত জব্বার মণ্ডলের ছেলে মোনছের মণ্ডল (৩৮)। গত শনিবার রাতে প্রথমে পাংশা উপজেলার মাদুলিয়ার নিজ বাড়ি থেকে মোনছের মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোপালবাড়ি বনগ্রাম থেকে আমিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রোববার বিকেলে ওই দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়। আমিন মিয়া ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। গতকাল রাতে পুলিশ সুপার শামিমা পারভীনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
জবানবন্দির তথ্যের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর দুই বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি এক ছেলেসন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি ঘাটাইলে থাকতেন। কয়েক মাস আগে আমিন মিয়ার সঙ্গে তাঁর মুঠোফোনে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক হয়। পরে আমিনের বন্ধু মোনছের মণ্ডলের সঙ্গেও ওই নারীর সখ্য গড়ে ওঠে। ১৮ অক্টোবর তাঁরা দুজন কৌশলে ওই নারীকে পাংশায় ডেকে আনেন। তিনি মোনছেরের বাড়িতে ছিলেন। ২০ অক্টোবর ওই বাড়ির পেছনের একটি বাগানে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে তিনজন অংশ নেন। পরে তাঁরা মৃতদেহ কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে ভ্যানে করে পাংশার মাদুলিয়া থেকে কালুখালী মোহনপুর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার বিলের নির্জন ধানখেতে ফেলে রাখেন।
শরীফ আল রাজীব জানান, গতকাল সন্ধ্যায় আদালতে দোষ স্বীকার করে আমিন মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে মোনছের মণ্ডল দোষ স্বীকার না করায় রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।