কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বড় ঘাঘুটিয়া গ্রামের বসতঘরের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া মা–ছেলেসহ তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের লাশ হস্তান্তর করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে নিহত তিনজনের লাশ ঘাঘুটিয়া গ্রামে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। গ্রামের লোকজন লাশ একনজর দেখতে সেখানে ভিড় করে। বিকেল পৌনে চারটায় গ্রামের বড় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে তাঁদের লাশ দাফন করা হয়।
এর আগে গতকাল রাতে হোমনার বড় ঘাঘুটিয়া গ্রামের শাহ পরানের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তাঁর স্ত্রী মাহফুজা আক্তার (২৯), ছেলে মো. সাহাত (৯) ও ফুফাতো ভাইয়ের মেয়ে তামিমা সিনহা তিশার (১৪) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তাঁদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ ধারণা করছে।
নিহত মাহফুজার স্বামী শাহ পরান জানান, তিনি ঢাকার একটি জুতার কারখানায় চাকরি করেন। ২০১৪ সালে মাহফুজার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তিনি ঢাকায় থাকায় তাঁর ফুফাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে থাকত। মাঝেমধ্যে তিশার ছোট বোনও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘুমাত। গতকাল তাঁরই ঘর থেকে স্ত্রী–সন্তানসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার হয়। তিনজনকে হারিয়ে তিনি দিশাহারা। তিনি খুনিদের বিচার চান।
স্বজনেরা জানান, বুধবার রাতে ছেলে সাহাদ ও আত্মীয় তিশাকে নিয়ে ঘরে ঘুমাতে যান মাহফুজা। গতকাল সকালে তিশাকে বিদ্যালয়ে নিয়ে ডাকতে আসে তার ছোট বোন। কিন্তু অনেক ডাকাডাকির পরও তাঁরা ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে সে জানালা দিয়ে তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে। পরে তার চিৎকারে অন্যরা বেরিয়ে এসে লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা, মাথায় আঘাতের পর, গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে একে একে তিনজনকে মাথায় আঘাত করে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ খাটের ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত মাহফুজা আক্তারের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।