নতুন করে পাহাড় কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) সতর্ক করে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। সিডিএ চেয়ারম্যানসহ ১০ ব্যক্তিকে গতকাল মঙ্গলবার এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বেলার পক্ষে আইনজীবী জাকিয়া সুলতানা এ নোটিশ দেন। সিডিএ চেয়ারম্যান ছাড়া নোটিশ দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালককে।
সিডিএর চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর শেরশাহ বাংলাবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা। ছয় দফা সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে চলতি বছরের জুনে। অবশ্য সড়কের মূল কাজ শেষ হওয়ায় ২০২০-এর মাঝামাঝি সময়ে যান চলাচল শুরু হয়। এখন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন করে পাহাড় কাটার কাজ শেষ করতে চায় সিডিএ।
এই সড়ক করতে গিয়ে ১৬টি পাহাড় কেটেছে সিডিএ। অনুমোদনের চেয়ে বেশি পাহাড় কাটায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সিডিএকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। অবশ্য পরে আবেদন করলে জরিমানা পাঁচ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে এখনো জরিমানার সে টাকা পরিশোধ করেনি সিডিএ। আবারও আবেদন করেছে।
২৯ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘আবার পাহাড় কাটবে সিডিএ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে বেলার আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, সিডিএ ইতিমধ্যে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে ১৬টি পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। এখন ঝুঁকি নিরসনের অজুহাতে নতুন করে এই ১৬ পাহাড়ের মধ্যে ৫টি পাহাড় কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেলার আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, আদালত ২০১২ সালের ১৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার সব পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতের এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হলেও সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার আবার নতুন করে পাহাড় কাটার সিদ্ধান্ত দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি চরম অবজ্ঞা ও উদাসীনতার শামিল। এ অবস্থায় পাহাড় না কেটে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ের ঝুঁকি নিরসন করা যায়, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে সদস্যদের মতামত নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় নোটিশে।