ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দ্রুতগতির বাসের ধাক্কায় একটি লেগুনা খালে পড়ে তিন যাত্রী ও চালক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুই যাত্রী। আজ বুধবার সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটবাউর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ঘটনাস্থলের উভয় পাশে কয়েক শ গাড়ি আটকা পড়ে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাগজান পাথরাইল গ্রামের মহাদেব চন্দ্র মোদক (৫০), একই উপজেলার বাগজান গ্রামের মুনসুর আলীর স্ত্রী মালেকা বেগম (৫৫), একই গ্রামের আবদুল সালামের স্ত্রী হেনা আক্তার (৫০) ও ভাটবাউর গ্রামের লেগুনাচালক জাহিদ হোসেন (৩৪)।
গোলড়া হাইওয়ে থানা–পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে জেলার ঘিওর উপজেলার তরা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাঁচজন যাত্রী নিয়ে লেগুনাটি মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ভাটবাউর বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী ওঠানোর জন্য লেগুনাটি সড়কের পাশে দাঁড়ায়।
এ সময় তরা এলাকার একটি শিল্পকারখানার স্টাফ বাস দ্রুতগতিতে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে লেগুনাটি মহাসড়কের পাশের খালের পানিতে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তলিয়ে যাওয়া লেগুনা থেকে চালকসহ ছয়জনকে উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ঘটনাস্থলে এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে অপর এক যাত্রী মারা যান।
উদ্ধার হওয়া দুই যাত্রীকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে আহত নাছির হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া মুসা মিয়া নামের অপর যাত্রীকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে আসার পর খালের পানিতে ডুবে যাওয়া লেগুনা থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনাকবলিত লেগুনাটি উদ্ধারকারী ক্রেন দিয়ে ওঠানো হয়েছে।
মানিকগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) মেরাজ উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজ চলার সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু বলেন, যাত্রী নামানোর জন্য মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পেছন থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপের একটি স্টাফ বাস লেগুনাটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় খালের পানিতে পড়ে গিয়ে চারজন নিহত হন।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধাক্কা দেওয়া বাসটিকে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের জন্য ৭ হাজার ৫০০ টাকার অর্থসহায়তা দিয়েছেন।