রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিরাপদ ক্যাম্পাসের’ দাবিতে আট শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।
ওই আট শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন নাম প্রকাশ করতে চাননি। অপর সাতজন হলেন—দর্শন বিভাগের রাবেয়া মুহিব ও শাহাদাৎ হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের রিমি আক্তার ও রাবেয়া জান্নাত, মনোবিজ্ঞান বিভাগের জান্নাত হাওলাদার এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের রিক্তাজুল হাসান ও সোহাইব খান।
এ সময় সাত দফা দাবি পেশ করেন অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, ‘আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে উঠব না। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—গতকাল শনিবারের ঘটনার জন্য প্রক্টরের পদত্যাগ ও প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ ও নির্দিষ্ট পাসকার্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে; আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে; হামলাকারীদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে রিকশাভাড়া ও খাবার বিল নির্ধারণ করে দিতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বহিরাগতদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ করতে হবে; শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে ও এতে রাজনৈতিক কোনো দখলদারত্ব থাকতে পারবে না এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলওয়ে স্টেশন আবার চালু করতে হবে।
গতকাল বগুড়া থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে বাসের আসনে বসা নিয়ে চালক ও চালকের সহকারীর সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন। এর জের ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তখন শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পাল্টা ধাওয়া করেন এবং দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
দফায় দফায় এ সংঘর্ষে স্থানীয় মানুষের হামলায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর এলাকায় দোকানে ও পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।