চুয়াডাঙ্গায় আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বুজরুকগড়গড়ির একটি বাগানে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা।
বাগান থেকে পরিপক্ব আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে এ জেলার জন্য চলতি বছরেও ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আজ থেকে আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে মৌসুম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২৪ মে থেকে হিমসাগর, ৩০ মে থেকে ল্যাংড়া, আগামী ৭ জুন থেকে আম্রপালি (বারি আম-৩), ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরুর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে নয়টায় পৌরসভার বুজরুকগড়গড়ির একটি বাগানে আম সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা। এ সময় তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার আম অনেক সুস্বাদু, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের আহ্বান চুয়াডাঙ্গার আম খাবেন। আমাদের বাগানমালিক ও চাষিরা যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হন, বিশেষ করে অসাধু ব্যক্তিরা যেন মুনাফা করতে না পারেন, সে বিষয়ে সবাই প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, অপরিপক্ব আম যাতে বাজারে না আসে, সে জন্য সবাইকে নজর দিতে হবে। ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ খাদ্য হিসেবে আম পৌঁছে দিতে হলে বাগানমালিক ও ক্রেতা-বিক্রেতাকে সচেতন হতে হবে। বাইরের জেলা থেকে এসে যাতে কেউ যেন অপরিপক্ব আম বাজারজাত করতে না পারেন, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
আম সংগ্রহ মৌসুমের উদ্বোধনের সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন বিনতে আজিজ, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, চুয়াডাঙ্গা জেলা ফল ও আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল কুদ্দুস মহলদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, ‘এবার জেলায় ২ হাজার ৩০৪ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে, যাতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফলন হবে। এ বছর আমের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। যেন আমরা নিরাপদ আম খেতে পারি এবং চুয়াডাঙ্গার আমের সুখ্যাতি অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ে, সে জন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।’
ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুস জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের বৃষ্টিতে আমের মুকুল ঝরে গিয়েছিল। এরপর এপ্রিলজুড়ে প্রচণ্ড গরমে ব্যাপক হারে আম ঝরে পড়েছে। ফলন কম হওয়ায় এবার আমের দাম বেশি। ঝরে পড়া আম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। পাকা আমের কেজি ৬০ থেকে ৭৫ টাকা হবে। দাম বেশি হওয়ায় লোকসান কিছুটা কমবে।