কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী বাস যশোর টার্মিনালে এসে থেমে যাচ্ছে। সেখানেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। এখান থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাত্রীরা অটোরিকশা বা নছিমনে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
আজ শুক্রবার দুপুরে যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। যশোরে আজ সকাল থেকে খুলনাগামী যাত্রীবাহী সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে শত শত সাধারণ মানুষ খুলনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে যশোর বাস টার্মিনালে এসে আটকে পড়ছে।
পরিবহন শ্রমিকেরা বলছেন, কাল শনিবার খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশ থাকায় যশোর থেকে খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। কী কারণে বাস চালানো বন্ধ রয়েছে, তা তাঁরা বলতে পারেন না।
যশোর শহরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন হুমায়ুন কবির। তাঁর বাড়ি খুলনার বয়রা এলাকায়। যশোর বাস টার্মিনাল এলাকায় দাঁড়িয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য টার্মিনালে এসেছেন। কিন্তু যশোর থেকে খুলনাগামী সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
অভয়নগর উপজেলা থেকে সকালে সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দিতে যশোর শহরে এসেছিলেন বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফেরার জন্য দুপুরে বাস টার্মিনালে এসেছিলেন। তিনি বলেন, খুলনা রুটে কোনো বাস চলছে না। অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে যেতে গেলেও ভাড়া লাগছে বাসের চেয়ে দুই বা তিন গুণ বেশি। আবার অটোরিকশাও পাওয়া যাচ্ছে না। রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে সাধারণ মানুষের এই ভোগান্তি দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
খুলনা-চুয়াডাঙ্গা লাইনের শাপলা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সবদুল শেখ বলেন, যশোর থেকে ১৬টি রুটে বাস চলাচল করছে। শুধু যশোর থেকে খুলনায় কোনো বাস চলাচল করছে না। বিএনপির সমাবেশের কারণে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক আজ প্রথম আলোকে বলেন, যশোরের কোনো বাস বা মাইক্রোবাস বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের অনেকে তাঁদের বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জানতে চাইলে আন্তজেলা বাস সিন্ডিকেট যশোরের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র কাপুড়িয়া বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা নিজেরাই বিএনপিকে বাস ভাড়া দিচ্ছি না। একই কারণে খুলনা রুটে বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।’
বিএনপির নেতারা বলছেন, যশোর থেকে প্রায় ১০ হাজার নেতা-কর্মী খুলনার সমাবেশে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক হাজারের মতো নেতা-কর্মী খুলনা শহরে পৌঁছান।