কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ফরিদা ইয়াসমিন (৩৩) নামের এক প্রতিবন্ধী নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ি ফকিরাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফরিদা ইয়াসমিন ওই এলাকার ছৈয়দ আহমদের মেয়ে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ি ফকিরাঘোনা এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল আলমের সঙ্গে ফকিরাঘোনার পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা রশিদ আহমেদের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে গতকাল গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ফরিদুল আলমের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় সন্ত্রাসীরা কয়েকটি ফাঁকা গুলি করেন। একপর্যায়ে বাড়িতে ঢুকে গুলি করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফরিদুল আলমের প্রতিবন্ধী ছোট বোন ফরিদা ইয়াসমিন নিহত হন। এই ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে খবর পেয়ে গতকাল রাত তিনটার দিকে মহেশখালী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে নিহত নারীর বড় ভাই ফরিদুল আলম বলেন, তাঁর পরিবারের ওপর টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্যাতনে চালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রশিদ আহমেদ ও তাঁর লোকজন এলাকায় জমি ও চিংড়িঘের দখলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি এর প্রতিবাদ করায় বিরোধ দেখা দেয়।
ফরিদুল আলম বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা তাঁকে আবারও হত্যার হুমকি দেন। এ কারণে রাতে তিনি বাড়িতে থাকেন না। তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা গতকাল গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। তাঁদের গুলিতে তাঁর ছোট বোন ফরিদা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে মারা যান।
জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ঘটনাস্থল থেকে ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির বুকের বাঁ পাশে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরার জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।