পদ্মায় ধরা পড়া ৩২ কেজির বাগাড় বিক্রি হলো অর্ধলক্ষ টাকায়

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী চান্দু মোল্যা ৩২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের বাগাড়টি অর্ধলক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন
ছবি: প্রথম আলো

পদ্মায় ধরা পড়া ৩২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের একটি মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে অর্ধলক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ঢাকার এক ব্যবসায়ী বাগাড়টি কিনে নিয়ে যান। এর আগে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের উজানে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে বাগাড়টি ধরা পড়ে।

স্থানীয় জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল সকালে পদ্মা নদীতে জাল ফেলেন পাবনার ঢালার চর এলাকার জেলে চুন্নু শেখ। দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের উজানে সকাল সাতটার দিকে তাঁদের জালে ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন, বড় কিছু আটকা পড়েছে। জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলেই দেখেন বড় একটি বাগাড় মাছ। বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া বাজার দেলোয়ার সরদারের আড়তে আনেন। নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় ব্যবসায়ী চান্দু মোল্যা বাগাড়টি কিনেন।

দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার চাঁদনী অ্যান্ড আরিফা মৎস্য আড়তদার চান্দু মোল্যা বলেন, ‘বাগাড়টির ওজন ছিল ৩২ কেজি ২০০ গ্রাম। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে ৪৮ হাজার ৩০০ টাকায় কিনে ফেরির পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখি। পরে ঢাকার গুলশান এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা লাভে ৫১ হাজার ৫০০ টাকায় মাছটি বিক্রি করে দিই। মাছটি সন্ধ্যায় ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’

এর আগে গত ২৮ জুন দৌলতদিয়া বাজারে পাবনার বাঘাবাড়ি এলাকার জেলেদের জালে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি মহাবিপন্ন প্রাণী বাগাড় ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ২৩ জুন ৩৫ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় ৪৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় মাছ একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার করা, ধরা বা বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার এবং প্রকাশ্যে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। কোনো বাধা ছাড়াই ইলিশ, পাঙাশ, রুই, কাতলা মাছের সঙ্গে পদ্মা ও যমুনা নদীতে জেলেরা শিকার করছেন মহাবিপন্ন বাগাড়।

গোয়ালন্দ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, ‘বাগাড় মাছ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২–এর আওতাভুক্ত হওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে চাইলে বন বিভাগের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।’