রাজশাহীর চিকিৎসক গোলাম কাজেমের খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় কর্মবিরতি শুরু করেছেন চিকিৎসকেরা। আজ শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় চিকিৎসকেরা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি থেকে তাঁরা খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) রাজশাহীর সভাপতি ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী। তিনি বলেন, ‘খুনিদের ধরতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাই বেঁধে দেওয়া সময় শেষে এই কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছি। রোববারও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।’
খুনিদের ধরতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রোববারের কর্মসূচি পালনের পর আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। এরপরও যদি খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।নওশাদ আলী, বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ
নওশাদ আলী আরও বলেন, ‘রোববারের কর্মসূচি পালনের পর আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। এরপরও যদি খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
কর্মসূচিতে বিএমএ রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ বি সিদ্দিকীসহ অন্য চিকিৎসকেরা বক্তব্য দেন।
গত ২৯ অক্টোবর রাত পৌনে ১২টার দিকে চেম্বারে রোগী দেখা শেষ করে ফেরার পথে খুন হন যৌন ও চর্মরোগবিশেষজ্ঞ গোলাম কাজেম আলী। তিনি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। শিক্ষকতা ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে শুধু প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার সময় তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গোলাম কাজেম যে রাতে খুন হন, সেই একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে নগরের চন্দ্রিমা থানাধীন কৃষ্টগঞ্জ বাজারের পল্লিচিকিৎসক এরশাদ আলীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রাত ৯টার দিকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে সিটিহাট এলাকায় এরশাদ আলীর রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। একই দিনে এ দুই চিকিৎসক খুনের ঘটনায় মামলা হলেও কোনো রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি।
রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার জামিরুল ইসলাম আজ দুপুরে বলেন, ‘দুটি খুনের ঘটনাই পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই খুনিদের শনাক্ত করা যাবে। এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো অবস্থা সৃষ্টি হয়নি।’