শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরপাতানিধি এলাকায় শিশু গৃহকর্মীকে (১২) হত্যা করার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিশুটিকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার কিশোর। সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বলেছে, তার মায়ের ব্যাগ থেকে ৭০০ টাকা চুরি করেছিল ওই শিশু। ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর তাকে বাসার একটি বাথরুমে ফেলে রাখা হয়।
হত্যার শিকার শিশু শরীয়তপুর পৌরসভার একটি এলাকার বাসিন্দা। গত জানুয়ারি থেকে সদরের চরপাতানিধি এলাকার এক প্রবাসীর বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছিল সে। গ্রেপ্তার কিশোর ওই প্রবাসীর ছেলে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার ওই প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যাগ থেকে ৭০০ টাকা খোয়া যায়, এমন অভিযোগ তুলে রাতে শিশুটিকে মারধর করে কিশোর ছেলে। বুধবার সকালে তাকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাথরুমে ফেলে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই নারী শিশুটিকে শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারী ও তাঁর কিশোর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন শিশুটিকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনেরও আলামত পাওয়ার কথা জানান চিকিৎসকেরা। এরপর পুলিশ ওই কিশোরকে আটক করে।
বুধবার রাত ১০টার দিকে ওই শিশুর বাবা পালং মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ওই কিশোরকে আসামি করা হয়। পরে ওই কিশোর বৃহস্পতিবার বিকেলে শরীয়তপুরের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেজবা উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর এ হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করেছে। তারপরও শিশুটিকে হত্যার ঘটনায় অন্য কোনো কারণ ও অন্য কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।