ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর-যাদবপুর ভায়া জিন্নানগর সড়কের মহেশপুর পৌরসভা এলাকার কিছু অংশ ধসে পড়েছে
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর-যাদবপুর ভায়া জিন্নানগর সড়কের মহেশপুর পৌরসভা এলাকার কিছু অংশ ধসে পড়েছে

১৮ মাসে সড়কে ৩ দফায় ধস

মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর-যাদবপুর ভায়া জিন্নানগর সড়ক গত জুন মাসে সংস্কার করা হয়। কিন্তু তিন মাস পর আবার সড়ক ধসে পড়েছে।

কপোতাক্ষ নদের তীর ঘেঁষে চলে গেছে খালিশপুর-যাদবপুর ভায়া জিন্নানগর সড়ক। এই সড়কের মহেশপুর পৌরসভার সামনে ১০২ মিটারের ভাঙন ঠেকাতে মাত্র ৩ মাস আগে ব্যয় করা হয় ৩২ লাখ টাকা। কিন্তু ভাঙন ঠেকানোর জন্য সেই সংস্কার কোনো কাজে আসেনি। দুই সপ্তাহ আগের বৃষ্টিতে আবার ধসে পড়েছে সড়কটি। সড়কটির এই দুরবস্থার কারণে প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, সংস্কারের কাজ হয়, কিন্তু তার মান ঠিক থাকে না। যে কারণে দুই-চার মাস যেতে না যেতেই গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক ধসে পড়ে। আর সড়ক বিভাগের দাবি, দুই বছর আগে নদী খননের সময় তলদেশ থেকে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এখন তারা যেভাবেই চেষ্টা করুন না কেন, তা কোনো কাজে আসছে না। তবে তারা এবার শক্তিশালী বাঁধ দিয়ে সড়ক সংস্কার করবে বলে পরিকল্পনা করছে।

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ব্যস্ততম সড়ক এভাবে ভেঙে পড়ে থাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঝিনাইদহ জেলার ভারত সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা মহেশপুর। ভারত সীমান্তের উপজেলা হওয়ায় এটির গুরুত্ব অনেক। এই উপজেলার মানুষের চলাচলের প্রধান পথ কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের খালিশপুর থেকে এই সড়ক শুরু হয়েছে। এটি খালিশপুর থেকে কপোতাক্ষ নদের পাশ দিয়ে মহেশপুর শহর পেরিয়ে দত্তনগর হয়ে জিন্নানগর পেরিয়ে যাদবপুরে গেছে। সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন।

স্থানীয় লোকজন আরও জানান, সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের সাড়ে ৪৮ কিলোমিটারে সংস্কারের কাজ করা হয়। এই সড়কের কিছু অংশ পড়েছে মহেশপুর শহরে। তাই সংস্কার করার পর শহরের বাসিন্দারা এই সড়ক দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করে আসছিলেন।

কিন্তু ২০২৩ সালের শেষ দিকে সড়কটির মহেশপুর শহরের মহেশপুর পৌরসভা ভবনের পাশে কপোতাক্ষ নদের ধারে ধস দেখা দেয়। ওই স্থানের ১০২ মিটার অংশের পিচঢালাই বসে যেতে শুরু করে। এরপর দেখা দেয় ভাঙন। অল্প দিনের মধ্যেই সড়কটির উত্তর পাশ ধসে কপোতাক্ষ নদের মধ্যে চলে যায়।

স্থানীয় আমিরুল ইসলাম জানান, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে প্রথমে ধসে যাওয়ার পর তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিলেন। এরপর সড়ক বিভাগ থেকে একদফা সংস্কার করা হয়। কিন্তু সেটা বেশি দিন টেকেনি। সংস্কারের ৮ থেকে ৯ মাস পরই আবারও ধস দেখা দেয়। এ অবস্থায় চলতি বছরের জুন মাসের দিকে দ্বিতীয় দফা সংস্কারের কাজ করা হয়। এবার মাত্র তিন মাস যেতে না যেতেই দুই সপ্তাহ আগে তৃতীয় দফা ধস নেমেছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আহসান উল কবীর জানান, তিন বছর আগে যখন সংস্কার করা হয়েছিল, তখন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। পরে কপোতাক্ষ নদ খননের কাজ করা হয়। সাধারণত নদ-নদী খননের সময় ভেতরের মাটি কেটে পাড় বাঁধা হয়। এখানে সেটা করা হয়নি। নদের ভেতর থেকে কাটা মাটি সড়কের ওপর রাখা হয়েছিল, সেই মাটি পরে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যে কারণে ভাঙনস্থানের তলদেশের মাটি আলগা থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।