নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থিতা নিয়ে দ্বন্দ্বে বড় ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে তাঁর ছোট ভাই ও প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, এই পরিবারের জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল হয়েছে। আমি যদি এটা জানতাম, তাহলে আগে তাদের বলতাম, আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলো।’ গতকাল শুক্রবার রাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন শাহাদাত।
শাহাদাত হোসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তাঁদের আরেক ভাই আবদুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।
এবারের উপজেলা নির্বাচনে শাহাদাতের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন আবদুল কাদের মির্জা। শাহাদাতের দাবি, তাঁর (শাহাদাত) প্রার্থিতা বাতিল করতে গোলাম শরীফকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে আপিল করিয়েছিলেন আবদুল কাদের মির্জা।
এবারের উপজেলা নির্বাচনে শাহাদাতের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন আবদুল কাদের মির্জা। শাহাদাতের দাবি, তাঁর (শাহাদাত) প্রার্থিতা বাতিল করতে গোলাম শরীফকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে আপিল করিয়েছিলেন আবদুল কাদের মির্জা।
এ প্রসঙ্গে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তাঁরা ঘোষণা করেন, তাঁদের প্রার্থী আওয়ামী লীগের। কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়া হয়নি। আমি জন্ম থেকে তাদের সহযোগিতা করে আসছি। কিন্তু তারা আমাকে কখনো সহযোগিতা করেনি। আমার মনে হয়, এই পরিবারের জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল হয়েছে। আমি যদি এটা জানতাম, তাহলে আগে তাদের বলতাম আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলো।’
বড় ভাই ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে শাহাদাত আরও বলেন, ‘তারা দুজনই দাবি করে, তারা দুজন ভাই। আমরা ভাই না। শিয়াল-কুকুর। আমরা কুলাঙ্গার। বলে কিসের ভাই? এই বিচার কার কাছে দেব আমি? প্রশাসন তো আমার বিরুদ্ধে। তারা সকাল-বিকেল আমার লোকদের নির্যাতন করছে। আমার একটা লোক রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারে না, তাকে ধরে নিয়ে বলে তোমার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এখানে আওয়ামী লীগের লোকদেরও বিএনপি-জামায়াত বলে এখন নির্যাতন করা হয়েছে।’
এর আগে ১৫ মে বসুরহাট পৌরসভার মিলনায়তনে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর এক মতবিনিময় সভায় ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনকে কুলাঙ্গার আখ্যা দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, শাহাদাত তাঁর ভাই নন।
তারা দুজনই দাবি করে, তারা দুজন ভাই। আমরা ভাই না। শিয়াল-কুকুর। আমরা কুলাঙ্গার। বলে কিসের ভাই? এই বিচার কার কাছে দেব আমি? প্রশাসন তো আমার বিরুদ্ধে। তারা সকাল-বিকেল আমার লোকদের নির্যাতন করছে।মো. শাহাদাত হোসেন
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে উপজেলা নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ফেরত পান শাহাদাত হোসেন। শাহাদাতের দাবি, আদালতে তাঁর বিজয় হয়েছে; এখন ২৯ মে পরবর্তী বিজয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন শাহাদাত হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে হেলমেট বাহিনী নামিয়ে দিয়েছেন। সব সদস্য বসুরহাটসহ গোটা কোম্পানীগঞ্জে তাঁর (শাহাদাত) সাধারণ কর্মী ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে সুস্থ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁর।
এ প্রসঙ্গে শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা বসুরহাটে ঘুরে দেখুন, তাদের কোনো ভোট আছে কি না? তারা হেলমেট বাহিনীর লোকদের দিয়ে বয়স্ক লোকদের হুমকি দিচ্ছে; কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি অসহায় মানুষ, আমার ওপরে আল্লাহ আছে, আর নিচে জনগণ আছে। ২৯ তারিখে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, ইনশা আল্লাহ আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে বারবার আমাকে নির্বাচন থেকে বহিষ্কার করছে, মনোনয়নপত্র বাতিল করছে। তাদের তাণ্ডবে আমার একটা কর্মী কোম্পানীগঞ্জে ঘুমাতে পারছে না। তারা হেলমেট বাহিনীর পাশাপাশি হাতুড়ি বাহিনীও বাহিনীও তৈরি করেছে।’