জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলেসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাবের ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামালপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিক গোলাম রব্বানির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব আসামির ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া সাংবাদিকেরা। পরে সাংবাদিকেরা এই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জামালপুরের সাংবাদিক সমাজ আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানাচ্ছি যে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে নির্ভীক সাংবাদিক গোলাম রব্বানির ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সাংবাদিক রব্বানি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রব্বানি হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু এজাহারভুক্ত অনেক আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।’
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে এই হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলার অভিযোগপত্র প্রদান, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর এবং নিহত সাংবাদিক রব্বানির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ভরণপোষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। আমরা (সাংবাদিকেরা) সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করি। আমাদের (সাংবাদিক) এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অনেক সময় সংবাদের বিষয়বস্তুতে উল্লেখিত সংবাদ সংশ্লিষ্ট বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বারবার আমরা (সাংবাদিক) আক্রান্ত হচ্ছি ও জীবন দিচ্ছি। পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাদের (সাংবাদিক) আইনি নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।’
১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন জামালপুরের বকশীঞ্জের সাংবাদিক রব্বানি। পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় মাহমুদুলের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিলঘুষি ও বেদম মারধর করা হয়। হামলার সময় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুলের ছেলে ফাহিম ফয়সাল সাংবাদিক গোলাস রব্বানির মাথায় আঘাত করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।