জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথে দুই মাস পর চলল লঞ্চ

জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যাত্রবাহী লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। জাজিরার সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

দুই মাস পর জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দিনে দুই ঘাট থেকে ৯টি করে লঞ্চের ১৮টি ট্রিপ চলেছে। প্রতিটি ট্রিপে ১০ থেকে ১২ জন করে যাত্রী পারাপার হয়েছেন।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার দুই দিন আগে ২৩ জুন এ নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত সোমবার লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিটিএ)। এরপর আজ লঞ্চ মালিক সমিতির উদ্যোগে আবারও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। আপাতত এ নৌপথে প্রতিদিন ৩০টি লঞ্চ ও ৪০টি স্পিডবোট চলাচলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাজিরার সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাট থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আবার শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা একটি লঞ্চ ১২ জন যাত্রী নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটে পৌঁছায়। এভাবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দুই ঘাট থেকে ৯টি করে ১৮টি ট্রিপ দিয়েছে লঞ্চ। তবে সারা দিনে কোনো স্পিডবোট চলেনি। চালকেরা স্পিডবোট নিয়ে প্রস্তুত থাকলেও যাত্রী না পাওয়ায় ছেড়ে যায়নি।

আজ লঞ্চে যাঁরা পদ্মা পার হয়েছেন তাঁদের সবার বাড়ি জাজিরার পদ্মার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে। তাঁরা মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে যাতায়াত করার জন্য এ নৌপথে পাড়ি দিয়েছেন।

জাজিরার পালের চরের বাসিন্দা মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাট কাছে। এখান থেকে সহজে লঞ্চে শিমুলিয়ায় যাওয়া যায়। পদ্মা পার হওয়ার পর সেখান থেকে কেরানীগঞ্জে যাব। নৌপথটি চালু থাকলে জাজিরার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের পদ্মার দক্ষিণ পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় যেতে সহজ হবে।’

এ নৌপথে এখন আর কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যাবে কি না, তা কয়েক দিন লঞ্চ চালানোর পর বোঝা যাবে বলে জানান সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটের ব্যবস্থাপক ও লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য মোকলেছ মাদবর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুই মাস পর লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। তবে যাত্রীদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার লঞ্চের একেকটি ট্রিপে ১০-১২ জন যাত্রী ও ৩-৪টি করে মোটরসাইকেল পার হয়েছে। লঞ্চ চালানোর জন্য যে তেল ও শ্রমিকের খরচ, তা উঠতে কমপক্ষে ৫০ জন যাত্রী হতে হয়। এর কম হলে লোকসান গুনতে হয়।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সালে ঢাকা-মাওয়া সড়ক দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে যাতায়াত শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এরপর এ পথটি জনপ্রিয় হতে থাকে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলার মানুষ এ সড়কে যাতায়াতের জন্য মাওয়া-কাওড়াকান্দি, কাঁঠালবাড়ি, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথ ব্যবহার করতে থাকে। সর্বশেষ এ নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ ও ৩৫০টি স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করা হতো।

২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হয়। ২৬ জুন থেকে যানবাহন নিয়ে মানুষ পদ্মা সেতু পার হতে শুরু করে। এ কারণে ২৩ জুন থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার বন্ধ করা হয়।