ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ববিরোধের জের ধরে রহিজ মিয়া (৩৮) নামের এক দিনমজুরের হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির চার ভাইসহ ছয় আসামিকে বিভিন্ন ছয় মাসের সাজা প্রদান করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জজ মিয়া (৪৫) কসবা উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া জজ মিয়ার আরও চার ভাই ইয়াছিন মিয়া (৩৭), খোকন মিয়া (৪১), পারভেজ মিয়া (৩৫), মনির হোসেন (৪৩) এবং স্থানীয় আওয়াল মিয়া (৪৭) ও তাঁর ছেলে আশরাফুল ইসলামকে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ২ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত, অনাদায়ে প্রত্যেকের এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জজ মিয়ার বাবা জমসিদ মিয়াসহ ৯ জনকে মামলার অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামের পান্ডাবের গোষ্ঠী ও কাবলি গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। নিহত দিনমজুর রহিজ মিয়া পান্ডাবের গোষ্ঠীর লোক ছিলেন। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে রহিজ মিয়া ও তাঁর বড় ভাই ফরিদ মিয়া ইউনিয়নের বাদৈর গ্রাম থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। জমসিদ মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছামাত্র তাঁদের পথ রোধ করেন আসামিরা। টেঁটা ও দা দিয়ে হামলা চালিয়ে রহিজ ও ফরিদকে জখম করেন তাঁরা। আর্তচিৎকারে স্থানীয় মানুষেরা এগিয়ে গেলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রহিজকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী নারগিছ বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর পুলিশ পরিদর্শক রতন চন্দ্র দেবনাথ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। সব যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করলেন। তবে এই রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রহিজ মিয়ার স্ত্রী নারগিছ বেগম। তিনি বলেন, ‘আদালতের এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। কারণ, অনেক আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।’