বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে আছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ জানান, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪৪ জন বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের তিন প্রান্তে যানবাহন আটকে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখে আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে লোকজনও চলাচল করছে না। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছেন তাঁরা।
বেলা ১১টার দিকে কোটা সংস্কারের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করার জন্য ক্যাম্পাসে জড়ো হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে সকাল থেকেই ঘিরে রাখেন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা।
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে মূল ফটক থেকে বের হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। দফায় দফায় সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই সংঘর্ষের পর পুলিশ পিছু হটে। এরপর শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান নিলে এই মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ১০ পর্যন্ত তাঁরা অবরোধ অব্যাহত রাখবেন। মহানগরের বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান বিকেলে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। দুপুর ১২টার পর থেকে মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরের সদর রোডে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। নগরের জিলা স্কুল মোড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে সকালে ও দুপুরে দুদফা তাঁদের ধাওয়া দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ফলে সদর রোড ও আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।