টাঙ্গাইলে মায়েদের পা ধুয়ে শিশুদের ভালোবাসা

টাঙ্গাইলে মায়ের পা ধুয়ে ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ পালন করল দেড় শতাধিক শিশু। শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল শহরের এসপি পার্কে এ আয়োজন করে
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলে মায়ের পা ধুয়ে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ পালন করল দেড় শতাধিক শিশু। শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল ভালোবাসা দিবসে ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করে। সন্তানেরা পা ধুয়ে মায়ের গলায় মেডেল পরিয়ে দিলে মায়েরা আপ্লুত হন।

আজ মঙ্গলবার শহরের এসপি পার্কে এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সরোয়ার আলম। স্কুলটির পরিচালনা পরিষদের উপদেষ্টা জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক, জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, রাইট ফেয়ার স্কুলের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জান্নাত জিরিয়া খান।

সকাল থেকে মা-বাবার হাত ধরে শিশু শিক্ষার্থীরা পার্কে উপস্থিত হয়। সকাল ১০টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল ভরে যায়। পার্কে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন দেড় শতাধিক মা। তাঁদের সন্তানেরা মগে পানি নিয়ে একসঙ্গে নিজ নিজ মায়ের পা ধুয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে। পরে মায়েদের গলায় মেডেল পরিয়ে দেয় তাঁরা। এমন ভালোবাসা পেয়ে শিশুদের জড়িয়ে ধরে অনেক মা আবেগে আল্পুত হন।

অভিভাবক শান্তা বেগম বলেন, ‘সন্তানের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা-শ্রদ্ধা পেয়ে আমি অভিভূত। শিশুদের ছোট থেকে যা শেখানো হবে, বড় হয়ে তারা তা অনুসরণ করবে। স্কুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এ রকম অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুরা ছোট থেকে মা-বাবার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ হবে।’

শিশু নীলাদ্রি খান বলে, ‘আমি মায়ের পা ধুয়ে দিয়েছি। মাকে মেডেল পরিয়ে দিয়েছি। আমার খুব ভালো লাগছে।’

হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের চেয়ারম্যান নওশাদ রানা সানভী বলেন, ‘আমরা মনে করি ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসা পাওয়ার প্রথম ভাগীদার মা-বাবা। যদিও তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য কোনো বিশেষ দিন প্রয়োজন হয় না। বিশেষ এই দিনে শিশুদের মনে মা–বাবার প্রতি অটুট ভালোবাসা এনে দিতেই এই আয়োজন করে থাকি। আমরা প্রতিটি শিশুকে শিখিয়ে থাকি বড় হয়ে ভালো মানুষ হতে হবে এবং নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।’

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। শিশুরা তাদের মায়ের পা ধুয়ে সম্মান দেখিয়ে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এমন অনুষ্ঠান তিনি প্রথম দেখলেন। তিনি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।