বেনাপোলে পৌর নির্বাচনের এক দিন আগে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’

যশোরের বেনাপোল পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমানের মধ্যে
ছবি: সংগৃহীত

এক যুগ পর আগামীকাল সোমবার যশোরের বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রার্থী নেই। ফলে মেয়র পদে ভোটের লড়াই এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমানের মধ্যে।

এদিকে ভোটের এক দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আরেক প্রার্থী ফারুক হোসেন। শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ফারুক আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসির উদ্দীন তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হোসেন বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে মনোনয়ন চেয়েছিলাম আমি। না পেয়ে ভোটারদের দাবির মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। দলের প্রতি আমি অনুগত। তাই দলীয় নির্দেশ মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফারুক হোসেন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি ও বিভ্রান্তি দেখা দেয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁকে নির্বাচনে প্রার্থিতা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই তিনি ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। শেষে ২ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কাছে তাঁকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে চিঠি পাঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সকাল আটটা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ চলবে। দুজন মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনে ১৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।

নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আনিচুর রহমান। তিনি বলেন, ৯টি বিদ্যালয়ের ১২টি কেন্দ্রে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় উপস্থিত থাকবেন। বিপুলসংখ্যক পুলিশ-আনসারের সঙ্গে তিন প্লাটুন র‍্যাব দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে। এই পৌরসভা নির্বাচনে ৩০ হাজার ৩৮৫ জন ভোটার আছেন।

২০০৬ সালে বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের অংশ নিয়ে বেনাপোল পৌরসভা গঠনের পর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। সে নির্বাচনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও আর নির্বাচন হয়নি। প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভার নির্বাচন মামলার কারণে বন্ধ ছিল।