কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে প্রায় এক মাস ধরে ঘোরাঘুরি করা মুখপোড়া হনুমানটিকে অবশেষে উদ্ধার করেছেন বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রায় দুই দিনের প্রচেষ্টার পর আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ইটনার চন্দ্রপুর গ্রাম থেকে হনুমানটি উদ্ধার করা হয়। বিকেলে হনুমানটিকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হয়।
করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর হাজীপাড়ার মো. সুমন মিয়াসহ কয়েক বাসিন্দা জানান, প্রায় এক মাস ধরে একটি মুখপোড়া হনুমান নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মুড়িকান্দি বাজারের আশপাশসহ বিভিন্ন পাড়ামহল্লায় ঘোরাঘুরি করছিল। হনুমানটিকে তাড়াইল উপজেলার কাজলা, সেচুয়ারকান্দী, চৌগাঙ্গা ও ইটনা উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের লোকালয়ে দেখা যাচ্ছিল। সেটি কখনো গাছে, আবার কখনো বাড়ির ছাদে ঘোরাফেরা করছিল। প্রতিদিন হনুমানটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করত। তবে কালো চেহারা দেখে শিশুসহ অনেকে ভয়ও পেয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি ছিল, হনুমানটিকে যেন দ্রুত উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ নিয়ে ৮ জুলাই প্রথম আলো অনলাইন ও ছাপা পত্রিকায় ‘লোকালয়ে মুখপোড়া হনুমান, দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়। সুমন মিয়া জানান, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইটনার চন্দ্রপুরের একটি গাছ থেকে বন্দুকের সাহায্যে অচেতন করা ইনজেকশন দিয়ে হনুমানটিকে খাঁচায় বন্দী করেন বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের পরিদর্শক নিগার সুলতানা প্রথম আলোকে জানান, মুখপোড়া হনুমানটি সিলেট বা চট্টগ্রাম থেকে দলছুট হয়ে কিশোরগঞ্জে চলে এসেছিল। সেটি করিমগঞ্জ, ইটনা ও তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে ঘোরাঘুরি ও উৎপাত করছিল। এতে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছিল। বিষয়টি করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানানো হলে বন অধিদপ্তরের চার সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল গতকাল বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় যায়। তারা গতকাল ও আজ চেষ্টা চালিয়ে হনুমানটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। আজ বিকেলে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে সেটিকে অবমুক্ত করা হয়।