পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আজ বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তবে সকাল সকাল দেখা মিলেছে ঝলমলে রোদের। সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া এলাকায়
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আজ বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তবে সকাল সকাল দেখা মিলেছে ঝলমলে রোদের। সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া এলাকায়

দেশে এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ তেঁতুলিয়ায়

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আজ বুধবার এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এখানে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তবে সকাল সকাল ঝলমলে রোদ ওঠায় বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থা।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এই মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। রাতভর হিমেল হাওয়ায় জনজীবন কাবু হয়ে পড়ে, তবে সকাল সকাল দেখা মিলেছে সূর্যের।

এবার পৌষের শুরু থেকেই উত্তরের এই জনপদে শীত জেঁকে বসলেও মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে শুরু হলো মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। রাতভর উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কুয়াশার দাপটে জবুথবু হয়ে পড়ছে জনজীবন। তবে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই আজ সকাল আটটার পর সূর্যের দেখা মেলায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশের কোনো এলাকায় ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়ায় বর্তমানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কুয়াশা কম থাকায় সকাল সকাল রোদ উঠেছে। বাতাসের গতিও কিছুটা কম। আকাশ মেঘ ও কুয়াশামুক্ত থাকায় সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে ছড়াতে পারছে। এতে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও দিনে শীত কম অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আকাশে ঘন কুয়াশা থাকলে উত্তরের হিমেল হাওয়ার গতি কম থাকে। ফলে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। আর আকাশ পরিষ্কার হয়ে কুয়াশার পরিমাণ কমে গেলে হিমেল হাওয়ার গতি বেড়ে যায়। এতে রাত ও ভোরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং কুয়াশা কম থাকায় সকাল সকাল সূর্যের দেখা মেলে। শীতকালে হিমালয়ের পাদদেশে বায়ুর চাপ বেশি থাকে আর বাংলাদেশে বায়ুর চাপ কম থাকে। যেহেতু বায়ুর চাপ বেশি ঘনত্ব থেকে কম ঘনত্বের দিকে যায়, সেই হিসাবে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে হিমেল বায়ু বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করায় বেশি শীত অনুভূত হয়।

এ ছাড়া শীতকালে ভারতের পাহাড়ি এলাকাগুলোয় সূর্য তীর্যকভাবে (হেলে) আলো ছড়ায়। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশেও আলো ছড়ায় সূর্য। এতে সূর্যের উত্তাপ ছড়াতে সময় লাগে। অপর দিকে শীতকালে রাতের চেয়ে দিন ছোট হওয়ায় এবং মাঝেমধ্যে ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্যের উত্তাপ পরিপূর্ণভাবে ছড়াতে পারে না। এতে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশি শীত অনুভূত হয়।

আজ সকালে ঝলমলে রোদের মধ্যে গায়ে পাতলা শার্ট পরে জমিতে ভুট্টাবীজ বপন করছিলেন সদর উপজেলার কৃষক সলেমান আলী। শীত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাতিত যেই হারে ঠান্ডা (শীত) ছিল, ওইখান ঠান্ডা এ্যালা (এখন) থাকিলে কাজ করা কঠিন হয়ে গেলে হয়। ভাইগ্য ভালো সকালে রোদ উঠিচে, কাজ-কাম করা যাছে, কিন্তু মাটির ঠান্ডায় পাওলা (পা দুটো) পটপট করেছে। রোদের তাপ বাড়িলে সেলা (তখন) মাটিখানও গরম নাগিবে।’