নাটোরে এবার এক মাদ্রাসার শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হাতুড়িপেটা করে চার কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশে ফেলে গেছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মাদ্রাসাশিক্ষকের নাম হাফেজ সাইদুল ইসলাম (৩৮)। তিনি নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা পূর্ব পাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি মাঝদিঘা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী।
এ নিয়ে গত এক মাসে নাটোরের চার উপজেলায় ১০ জনকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে, হাত-পায়ের রগ কেটে, গুলি করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আগের ৯ জনের মধ্যে একজন বিএনপি ও দুজন যুবদলের নেতা। বাকি ছয়জন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী ও সমর্থক। ওই নয়টি হামলার ঘটনার ছয়টি ঘটেছে নলডাঙ্গা উপজেলায়। বাকি তিনটি নাটোর সদর, সিংড়া ও লালপুর উপজেলার।
পুলিশ ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সাইদুল মাঝদিঘা মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে মুখোশধারী ছয়-সাতজন দুর্বৃত্ত তাঁকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ছাতনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনসহ তাঁর সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং থানা-পুলিশকে খবর দেন। রাত আটটার দিকে তাঁরা খবর পান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে নাটোর-নলডাঙ্গা সড়কের চিকুর মোড়ে ওই ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যার পরে এলাকায় একটি সভা করার সময় তিনি সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পান। পরে খোঁজখবর নিয়ে চিকুর মোড় থেকে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর হাত-পায়ে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কিছুটা অসুস্থ থাকায় বিট কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আমিনুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে। এ ঘটনায় তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।