‘প্রহসনের ভোট’ বর্জন করলেন পাবনার তিন প্রার্থী

সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন শেষে গণনার প্রস্তুতি চলছে। ভোটের সব মালামাল বুঝে নিচ্ছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। রোববার বিকেল চারটায় পাবনার চাটমোহর রামচন্দ্রপুর দ্বি-মুখী সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

পাবনা-২ আসনের বিএনএমের প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী, পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ও পাবনা-৫ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেন ভোট বর্জন করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রকাশ্যে সিল মারা ও ভোট নেওয়া, ভোট জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ করেন। রোববার বেলা তিনটার দিকে তাঁরা এ ঘোষণা দেন।

পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য। পাঞ্জাব আলী বলেন, এই নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে তাঁরা অধিকাংশ কেন্দ্রে প্রকাশ্যে সিল মেরেছেন। ঈশ্বরদী উপজেলা সদর, আটঘরিয়ার প্রতিটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে সিল মারা হয়েছে। তিনি বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এরপরও বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট নেওয়া বন্ধ হয়নি। তাঁর লোকজনকে প্রতিটি কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি এই ‘প্রহসনের নির্বাচন’ থেকে সরে গেলেন।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রয়াত ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমানের ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ, জাতীয় পার্টি থেকে রেজাউল করিম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে আতাউল হাসান, জাসদের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মনছুর রহমান।

সুজানগর-বেড়ার একাংশ নিয়ে গঠিত পাবনা-২ আসন। বিএনএম প্রার্থী ও সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের নৌকা প্রতীকে সিল দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বুথের ভোট, মাঠে বসে দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে হাতে কয়েকটা ধরেছি। ধরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই ভোট বর্জন করেছি।’

পাবনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির, স্বতন্ত্র আব্দুল আজিজ খান, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মোমিনুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির মেহেদী হাসান, তৃণমূল বিএনপির আবুল কালাম আজাদ, জাসদের শেখ আনিসুজ্জামান ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আজিজুর রহমান।

পাবনা-৫ (সদর) আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেনও ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন। বেলা তিনটার দিকে তিনি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা দুর্বল প্রার্থী। এরপরও কেন ভোট কেটে নিতে হলো? প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট কাটা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৯৯৯ নম্বরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়েছি। এরপরও ভোট কাটাকাটি বন্ধ হয়নি। তাই আমি ভোট প্রত্যাখ্যান করেছি।’

আসনটিতে আরও প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক, জাতীয় পার্টির আব্দুল কাদের খান, তৃণমূল বিএনপির আফজাল হোসেন ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবু দাউদ।

জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। প্রার্থীরা যে যা অভিযোগ করেছেন, প্রতিটি অভিযোগের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।