কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এ সময়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো অনুষ্ঠান না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিমের নামে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রক্টরিয়াল বডির জরুরি নির্দেশনা’ শিরোনামে দেওয়া নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রক্টর নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ‘ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজনটি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এরপরই ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার’ কারণ দেখিয়ে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সব অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রক্টরিয়াল বডির দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জানানো যাচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অনিবার্য কারণবশত আজ দুপুর ১২টা থেকে আগামী রোববার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সব সাংগঠনিক কার্যক্রম/অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই সময়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের জড়ো হয়ে কোনো অনুষ্ঠান না করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, আজ বিকেল পাঁচটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দুই হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খিচুড়ি ভোজ ও ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেন কয়েকজন সমন্বয়ক। কিন্তু অনুষ্ঠানের অর্থের সংস্থান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীসহ সমন্বয়কদের একটি অংশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্তত তিনজন শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনে অংশ নিয়ে অনেকে আহত হয়ে এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। অর্থের অভাবে তাঁদের সুচিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে এমন আয়োজন আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে মশকরা করা।
আয়োজকদের একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক জান্নাতুল ইভা বিকেল পৌনে চারটার দিকে বলেন, ‘আমাদের সব আনুষ্ঠানিকতা চূড়ান্ত। বাবুর্চিরা চলে এসেছেন, কেনাকাটাও শেষ। এমন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। তবে খিচুড়ি ভোজের আয়োজনটি থাকছে।’
প্রক্টর মো. আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টরিয়াল বডি চাইলে অনুষ্ঠান শুরুর এক ঘণ্টা আগেও কার্যক্রম স্থগিত করতে পারে। আমাদের কাছে আজকের অনুষ্ঠানটি ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে আরও কিছু তথ্য এসেছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের আজকে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানটি স্থগিত থাকবে। রোববার সন্ধ্যার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম বা অনুষ্ঠান করা যাবে না।’