অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম নার্গিস আক্তারকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৮ আগস্ট অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানায় শিক্ষার্থীদের একাংশ। এর পর থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন তিনি। নার্গিসকে প্রতিষ্ঠানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
এদিকে নার্গিসকে সাময়িক বরখাস্তের পর প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মুস্তফাকে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ফাহমিদা মুস্তফা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আবার নার্গিসকে কর্মস্থলে যোগদানের অনুরোধ করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার নার্গিস আক্তার প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবার আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে দিনভর বিক্ষোভ ও শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় নার্গিসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড।
এর আগে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা মুস্তফা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘উপযুক্ত বিষয়ে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কুমিল্লার ১১/১২/২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের গভর্নিং বডির ৩৩তম সভার ২ আলোচ্যসূচি অনুযায়ী আপনাকে অদ্যই কর্মস্থলে যোগদান করার অনুরোধ করা হলো।’
নাম প্রকাশ না করে অন্তত তিনজন শিক্ষক বলেন, নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পুরোনো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষকের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসন। তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতাও পাওয়া যায়। এরপরও তাঁকে আবার পুনর্বহালের চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষকেরা পদত্যাগ করেছেন, বিষয়টি এখানে তেমন নয়। তিনি আগে থেকেই অভিযুক্ত।
শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন প্রায় ছয় মাস তদন্ত করেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২৬টির বেশি অভিযোগ আছে। তাঁরা নতুন বাংলাদেশে এমন দুর্নীতিবাজ কাউকে অধ্যক্ষের চেয়ারে দেখতে চান না। তাঁরা তাঁর স্থায়ী বহিষ্কার চান।
এ ব্যাপারে আজ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মুস্তফার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। সাবেক অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তারের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ধরেননি। তবে জেলা প্রশাসনের দুজন ম্যাজিস্ট্রেট আন্দোলন চলাকালে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিস্তারিত জেনেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।