বাহাদুরকে সামলাতে লাগে ১০-১২ জন, মালিকের কণ্ঠ শুনলেই শান্ত

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের হরগোবিন্দ এলাকার কৃষক সহিদার রহমানের গরুটির নাম বাহাদুর। প্রায় ২৭ মণ ওজনের এই গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ১০ লাখ টাকা দাম উঠেছে
ছবি: মঈনুল ইসলাম

শখ করে নাম রেখেছেন বাহাদুর। ঘরের বাইরে বের করতে ও বাহাদুরকে সামলাতে ১০ থেকে ১২ জন লোক লাগে। তবে লালন–পালনকারী সহিদার রহমানের গলার স্বর শুনলেই শান্ত হয়ে যায় গরুটি। কোরবানি উপলক্ষে বাহাদুরকে দেখতে বাড়িতে আসছেন ক্রেতারা। ভিড় করছেন আশপাশ এলাকার কৌতূহলী লোকজনও। প্রায় ২৭ মণ ওজনের গরুটির দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ১০ লাখ টাকা দাম উঠেছে।

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের হরগোবিন্দ এলাকার কৃষক সহিদার রহমান (৫৪) তিন বছর ধরে গরুটি লালন–পালন করে বড় করেছেন।

সহিদার রহমান জানান, খুব যত্ন নিয়ে লালন–পালন করে বড় করেছেন বাহাদুরকে। তিন বেলা গোখাদ্যের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে কলা, কমলা, আপেলসহ নানা রকম ফল খেতে দিয়েছেন। কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুত করা বাহাদুরকে বিক্রি করতে রাখা হয়েছে বিশেষ অফার। বাহাদুরকে কিনলে সঙ্গে একটি রেফ্রিজারেটর উপহার দেবেন তিনি। এ ছাড়া কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত বাহাদুরের খাওয়াদাওয়া বিনা মূল্যে করানোর ব্যবস্থাসহ ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করবেন।

সহিদার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মোটাতাজাকরণের জন্য গরুকে কোনো ইনজেকশন দেওয়া হয়নি। সম্পূর্ণ দেশি খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। ভুট্টার আটা, গমের ভুসি, ভাতসহ নিজের জমির খড় ও নেপিয়ার ঘাস ছিল বাহাদুরের খাদ্যতালিকায়। তিনি বলেন, খাবারের পেছনে প্রতিদিন ব্যয় হয় ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। কখনো কখনো এর বেশিও লেগেছে। এ ছাড়া কলা, কমলা ও আপেল খাওয়ানো হতো। শীতকালে এক বেলা আর গরমকালে তিন বেলা গোসল করানো হয় বাহাদুরকে।

সহিদার আরও জানান, তিনি নাতি-নাতনিদের জন্য বাজার থেকে ফল কিনলে বাহাদুরের জন্যও আনেন। মানুষের মতো বাহাদুর এখন ফল খেয়ে অভ্যস্ত।

সহিদার রহমানের প্রতিবেশী ও তরুণ উদ্যোক্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘গরু পালনে বেশ সফল ও যত্নবান মানুষ তিনি (সহিদার)। এই গরুর প্রতি উনার অনেক ভালোবাসা দেখেছি। প্রতিদিন কত যত্ন করেন, তা খুব কাছ থেকে দেখেছি।’

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ‘শুনেছি উনি (সহিদার) বেশ যত্ন নিয়ে তিন বছর ধরে গরুটি লালন–পালন করে বড় করেছেন। তবে তিনি মোটাতাজাকরণ খাবার খাওয়াননি। দেশি খাবার খাইয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, রংপুর জেলায় এবার ২ লাখ ২০ হাজার ৩৪৪টি পশুর চাহিদার বিপরীতে বিভিন্ন খামারে পশু আছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৮৫টি।